ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

অপারেটর অব ডিজি কে? ধাঁধাঁয় মাউশি!

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৫
অপারেটর অব ডিজি কে? ধাঁধাঁয় মাউশি!

ঢাকা: এক শিক্ষকের কাছে প্রায় লাখ টাকা নিয়ে এমপিওভুক্ত করে দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ‘অপারেটর অব ডিজি’। এমপিওভুক্তির আইডি নম্বর যুক্ত কম্পিউটার প্রিন্টিং কাগজও পেয়েছেন।

কাগজ হাতে মাউশি’তে এসে ওই আইডি’র বিপরীতে বাস্তবে তার এমপিওভুক্তির খোঁজ মেলেনি, পাওয়া যায়নি সেই ‘অপারেটর অব ডিজি’র হদিস।

মাউশির’র লোগোসহ কম্পিউটারে প্রিন্ট করা হুবহু কাগজ নিয়ে মাউশিতে এই অভিযোগ দিয়েছেন ফেনীর একটি মাদ্রাসার এক সহকারী শিক্ষক। চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে মাউশি’র বিদ্যালয় শাখায়, ভুয়া ওই ‘অপারেটর অব ডিজিকে এখন খুঁজছেন মাউশি’র বিদ্যালয় শাখার কর্মকর্তারা।

এভাবে ভুযা এমপিও’র নাম করে শিক্ষকদের প্রতারিত করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একাধিক চক্র। উপজেলা পর্যায় থেকে ঢাকার শিক্ষা ভবনের মাউশি পর্যন্ত এমন সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর।

শিক্ষক ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় বেতন-ভাতার আশায় এ নিয়ে এমপিও’র আবেদনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে চরম ক্ষোভ।

মাউশি’র বিদ্যালয় শাখার কর্মকর্তারা জানান, ফেনীর দাদনভূঞা এ.এস. মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তার একটি বিকাশ নম্বর (০১৭০৫৯৯৮৩১৭) থেকে আশি হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন (০১৭১৯৪৭৫৪৫৬) ‘অপারেটর অব ডিজি’ বরাবর।
 
এমপিওভুক্তির জন্য ‘১০০৯৭১৫’ আইডি নম্বর সম্বলিত কম্পিউটার প্রিন্টিং কাগজ হাতে নিয়ে ওই শিক্ষক তার এমপিও’র কোন হসিদ পাননি। বাধ্য হয়ে রোববার মাউশির বিদ্যালয় শাখায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

শুধু ওই শিক্ষক নন, শক্তিশালী সিন্ডিকেটের হাতে এমন প্রতারিত হচ্ছেন নন-এমপিও একাধিক শিক্ষক। তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

ফেনীর আরেকটি হাইস্কুলের একজন শিক্ষককে এমপিওভুক্তির আইডি (এন১১০৬১০২) দিয়েছেন মাউশি’র আরেক অজ্ঞাত পরিচয় কর্মকর্তা। চুক্তির টাকা দেওয়ার আগে চেক করতে এসে তিনিও এমপিওভ‍ুক্তির প্রমাণ পাননি।

মাউশির কর্মকর্তারা জানান, এমপিওভুক্তির কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, কোড পরিবর্তন করে শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তন ও টাকা উত্তোলনসহ এমন নানা অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে কারা এর সঙ্গে জড়িত তার হদিস পাচ্ছে না তারা। কর্মকর্তাদের ধারণা, মাউশি থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত এ ধরনের কারসাজি চলছে। এসব প্রতারণার সঙ্গেও একাধিক সিন্ডিকেট জড়িত।

এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মো. এলিয়াছ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কম্পিউটারাইজ পদ্ধতিতে এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়ায় ড্যাশ বোর্ডের মাধ্যমে আবেদনকারী শিক্ষক থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য জানতে পারছেন বলে জানান এলিয়াছ হোসেন।

অধিদপ্তরের কম্পিউটার সেল (ইএমআইএস) আরও উন্নত করা হয়েছে জানিয়ে এমপিওভুক্তির জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করার পরামর্শ দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, এমপিওভুক্তির আবেদন প্রক্রিয়া দিন দিন আরও উন্নত করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আর কেউ এতে ফায়দা লুটতে পারবে না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৫
এমআইএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।