জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: হল প্রশাসনের উদাসীনতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রদের দীর্ঘদিন ধরে পোহাতে হচ্ছে নানা দুর্ভোগ। স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যা প্রভোস্টকে জানালেও সমাধান পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
এ অভিযোগ হলের শিক্ষার্থীদের। হলের বিভিন্ন সমস্যা জানাতে সম্প্রতি প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন তারা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষার্থীরা এ সভার আয়োজন করে।
সভায় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, হলের ভিতরে সিট সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। একই কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। কক্ষগুলোতে পড়াশোনার পরিবেশ নেই। হলের ভিতরে নেই রিডিং রুমের ব্যবস্থা। ক্যান্টিন থাকলেও যথাযথ মনিটরিং না থাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অন্য হলগুলোতে ফটোকপি মেশিন থাকলেও ভাসানী হলে নেই। খেলাধুলা করার মতো কোনো মাঠ নেই, নেই পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রীও।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের দায়িত্বে থাকা প্রাধ্যক্ষসহ অন্য আবাসিক শিক্ষক হলে নিয়মিত আসেন না। প্রাধ্যক্ষের একটি স্বাক্ষরের জন্য কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয় শিক্ষার্থীদের।
মওলানা ভাসানী হলের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সৈয়দ এলতেফাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, হলের নানামুখী সমস্যার সমাধান তখনই সম্ভব হবে যখন হলের দায়িত্বরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমন্বয় থাকবে।
দায়িত্বরত শিক্ষকদের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ হলে যেসব শিক্ষক দায়িত্বে আছেন তাদের সঙ্গে হলের শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। আর হবেই বা কি করে। বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান ছাড়া এসব শিক্ষক হলে পা রাখেন না। আর যেসব শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রয়েছে সেটা রাজনৈতিক সম্পর্ক।
নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, নিরাপত্তার অভাবে নিয়মিত হলে চুরিসহ নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। এ সমস্যা সমাধানে হল কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমনকি হলে দায়িত্বরত গার্ডরাও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। যার কারণে অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।
হল প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা অপারগ হলে বলুন, প্রয়োজনে আমরা প্রতি শিক্ষার্থী একদিন করে হল পাহারা দেবো।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মওলানা ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সৈয়দ হাফিজুর রহমান, ওয়ার্ডেন মো. আব্দুল হালিম, মো. জালাল উদ্দিন, আবাসিক শিক্ষক মো. আশরাফুল আলম, ড. মো. কামরুল হাসান, সহকারী আবাসিক শিক্ষক, এম এম ময়েজ উদ্দিন, মো. সাখাওয়াত হোসেন, মো. তরিকুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মুরশিদুর রহমান আকন্দ, মো. হুমায়ুন করিব প্রমুখ।
প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সৈয়দ হাফিজুর রহমান বলেন, হলের সমস্যাগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে শুনেছি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত এসব সমস্যাসমাধান করতে। তবে শিক্ষার্থীরা যে সমস্যাগুলোর কথা বলেছে তার সবগুলো হল প্রশাসনের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। কিছু সমস্যা আছে যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সমাধান করতে হবে। তাই শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে তাদের সমস্যাগুলো আমাদের জানালে আমরা সেগুলো সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাবো।
তিনি আরও বলেন, একটা স্বাক্ষর করতে তিন দিন লাগে, এটা যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তবে আমি পদত্যাগ করবো।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৫
এএ