ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত দাবি-দাওয়া চলতি মাসের মধ্যেই মেনে না নিলে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি বন্ধ (কমপ্লিট শাটডাউন) করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন শিক্ষকেরা।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, এই মাসের মধ্যে দাবি না মানলে ২ জানুয়ারি ফেডারেশনের সভা থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সেটা কমপ্লিট শাটডাউনের মতো কর্মসূচিও হতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির এ সভাপতি বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত না ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছিলাম। এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। নিজেদের মর্যাদার প্রশ্নে এখান থেকে ফিরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই’।
গত আট মাসব্যাপী শিক্ষকদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের যৌক্তিকতা ও ন্যায্যতা তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য যখন যে পদক্ষেপ অবলম্বনের প্রয়োজন ছিল আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রেখে সে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এজন্য আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে স্বল্পতর পরিসরে কর্মবিরতি, মানববন্ধন ও স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করে সব মহলের যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, তেমনি আমাদের দাবি-দাওয়ার ন্যায্যতাও প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি’।
‘কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক ছল-চাতুরি ও শিষ্ঠাচার বহির্ভুত কর্মকাণ্ড আজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে’।
‘নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন আজ ধৈর্যচ্যুতির শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে’ উল্লেখ করে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল। এর মধ্যে রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা বিতর্কিত পরিপত্রটি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এ ধরনের পরিপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও শাস্তির আওতায় আনা, ইতোপূর্বে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদেরকে পাঠানো পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া, চলতি মাসের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অর্থমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ’১৯৭৩- এ কোনো অশুভ হস্তক্ষেপ না করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগেরও দাবি জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে সকল আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক উল্লেখ করে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া পূরণে বরাবরের মতো তার দ্রুত হস্তক্ষেপও কামনা করেন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল।
** অষ্টম পে-স্কেলে শেকৃবি শিক্ষকদের অসন্তোষ, ৫ দফা দাবি
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
এসএ/এএসআর