ঢাকা: প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন করে অধ্যাপককে সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা বা সুপার গ্রেড দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। আর শিক্ষকদের দাবি সিনিয়রিটির ভিত্তিতে অন্তত ৫ শতাংশ অধ্যাপককে পদোন্নতি।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন’ এটাসহ অন্যান্য দাবি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন বলছে, দাবি পূরণের আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। তারা বিশ্বাস করছেন, দাবি পূরণ হবে।
টানা ৯দিন লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে সরকারকে দেওয়া শিক্ষকদের সময় শেষ হচ্ছে বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি)।
৪ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন শিক্ষকেরা।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন জানায়, দাবির বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে। সরকারের প্রতিনিধি ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা।
ফেডারেশনের একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, সরকার চায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন করে অধ্যাপককে সিনিয়র সচিব মর্যাদায় পদোন্নতি দিতে, কিন্তু শিক্ষকরা চান সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ শতাংশ সিনিয়র শিক্ষককে পদোন্নতি দেওয়া হোক।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে, আলোচনা এগোচ্ছে। কালকে (বুধবার) পর্যন্ত ওয়েট করব। পরশু (বৃহস্পতিবার) সকালে মিটিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
ফেডারেশেনের মহাসচিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বাংলানিউজকে বলেন, দু’টি মিটিং হয়েছে। অগ্রগতি হচ্ছে, হতেই হবে।
শিক্ষকদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ফেডারেশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হবে জানিয়ে মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্বাস করি, শিক্ষকদের চাওয়া অনুযায়ী সমাধান হয়ে যাবে।
ফেডারেশন সূত্র বলছে, ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে আর হার্ডলাইনের আন্দোলনে যাবেন না শিক্ষকরা। দাবি বাস্তবায়নের প্রেক্ষাপটে মার্চে আন্দোলনে যেতে পারেন। তবে তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আশ্বাস দিয়েছেন, আলোচনা করে দ্রুত একটা সমাধানে আসবে।
অষ্টম বেতন কাঠামোতে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেলে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি অধ্যাপকদের পদ ‘অবনমন’ হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।
আগের সপ্তম বেতন কাঠামোতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৩ এ উন্নীত হওয়াসহ যে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসতেন তা বহাল রাখা, গ্রেড-১ থেকে কিছু সংখ্যাক শিক্ষককে সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা (সুপার গ্রেড) দেওয়ার জন্য আন্দোলন করছিলেন।
১১ জানুয়ারি থেকে আন্দোলনের পর ১৮ জানুয়ারি গণভবনে পিঠা উৎসবে ডেকে শিক্ষক ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর শিক্ষকরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব জমা দেন।
১৯ জানুয়ারি সভা করে লাগাতার কর্মবিরতি স্থগিত করেন শিক্ষকরা। ওই দিন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেছিলেন, ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে, আশা করি এই সময়ের মধ্যে দাবিগুলো পূরণ হবে। যদি তা না হয় তাহলে ওই সভা থেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবো।
অন্যান্য দাবির মধ্যে কিছু সংখ্যক শিক্ষককে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে ‘বিশিষ্ট অধ্যাপক’ করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। তরুণ শিক্ষকদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু বৃত্তি চালু ও গবেষণার ব্যবস্থা করার দাবি ছিল শিক্ষকদের।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে কাজ করছেন। খুব শিগগিরই তা সমাধান হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
এমআইএইচ/এসএইচ
** বুধবার থেকে ক্লাস, কূট-কৌশল মেনে নেবেন না শিক্ষকরা
** বুধবার ক্লাসে ফিরছেন শিক্ষকরা
** শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত
** ক্লাসে ফেরার বিষয়ে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষকরা
** শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরতে বললেন প্রধানমন্ত্রী