ঢাকা: চলতি শিক্ষাবর্ষে উচ্চ মাধ্যমিকে (এইচএসসি) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে এবার দশটি কলেজ পছন্দের সুযোগ রাখছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবারও অনলাইনে এবং এসএমএসের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মতামত দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন নামি-দামি সরকারি-বেসরকারি কলেজের প্রধানরা।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতামত চূড়ান্ত করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে বুধবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ৪৪টি কলেজের প্রধান ও প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান সভায় সভাপতিত্ব করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বাংলানিউজকে বলেন, কলেজ প্রধানদের মতামত লিপিবদ্ধ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে। এরপর ভর্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আগামী ১০ বা ১১ মে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হতে পারে বলে জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
গত বছরের ‘ঝামেলাপূর্ণ অভিজ্ঞতা’ মাথায় রেখে এবার আগেভাগে ভর্তি প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ভর্তি প্রক্রিয়া বিষয়ে কলেজ প্রধানদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, গতবছর ভর্তি প্রক্রিয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন কলেজ প্রধানরা।
‘সরকারি কলেজের অধ্যক্ষরা জানিয়েছেন, অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সরকারি কলেজে সুবিধার কথা জানিয়েছেন। ভর্তির জন্য কোন ধরনের চাপ বা তদবির ছিল না। ’
পাশাপাশি বেসরকারি কলেজগুলোর ক্ষেত্রে পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে না পারা এবং বিভাগ না থাকলেও অন্য বিভাগের মনোনয়ন নিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন অধ্যক্ষরা।
ওই কর্মকর্তা বলেন, এসব সমস্যা এড়াতে এবার পূর্বের পাঁচটির জায়গায় ১০টি কলেজে পছন্দের সুবিধা দেওয়ার মতামত এসেছে এবং সে বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ভর্তি ও সেশন ফি যেন বেশি না রাখা হয় সে বিষয়েও মতামত এসেছে। টেলিটকের মাধ্যমে ভর্তি ফি প্রদান করা হবে।
প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার সভায় অধ্যক্ষরা অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন বলে জানান বোর্ড চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান। ভুল-ভ্রান্তি দূর করে স্বাচ্ছন্দে ভর্তি প্রক্রিয়া চালানোর মতামত এসেছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সকল বোর্ড চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।
ভর্তি প্রক্রিয়া ঝামেলাহীন করতে এবার আগে থেকেই উদ্যোগ নিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।
গত ১৮ এপ্রিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানদের নিয়ে সভায় অনলাইনে আবেদন এবং কলেজে মনোনয়ন দিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়।
এসএসসির ফল প্রকাশের পর আগামী ১২ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নিয়ে সভায় ভর্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে বলে জানায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
গত কয়েক বছর ধরেই এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে কলেজে ভর্তি করানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তত্ত্বাবধানে গত বছর উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথমবার অনলাইনে ও মোবাইলে এসএমএস করে প্রথমবার ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর পর নানা জটিলতা তৈরি হয়। চার দফা মেধা তালিকা প্রকাশ করে মনোনয়ন দিয়ে ভর্তি করানো হলেও প্রথম দফার ফল পেতে ভোগান্তির শিকার হন ভর্তিচ্ছুরা।
শিক্ষার্থীদের অনেকেই পছন্দের কলেজ না পাওয়া এবং ‘ভুল’ মনোনয়নের কারণে সমালোচনার মুখে পড়ে অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম চেয়েছিলেন যেসব কলেজে ৩০০ আসন আছে সেসব কলেজে অনলাইনে ভর্তি করানো হোক। কিন্তু নজরুল ইসলাম খান ঢালাওভাবে সব কলেজে অনলাইনে ভর্তির সিদ্ধান্ত দেন।
সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান একক সিদ্ধান্তে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নেয় বলে সমালোচনা হলেও এবার সেই পথেই হাঁটছে কলেজ প্রধান এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
এইচএসসিতে ঝামেলাহীন ভর্তিতে এবার আগেভাগেই প্রস্তুতি
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএম