ঢাকা: সকাল থেকেই সূয্যি মামা যেন একটু বেশিই কঠোর! অজানা কারণে রেগে-মেগে তাপ ছড়াচ্ছে ইচ্ছে মতো। কিন্তু তাতে কী আর দমানো যায় অদম্য তারুণ্য।
জীবনে চলার প্রথম ধাপ যারা পার করলো দারুণ কৃতিত্বের সঙ্গে সেই তাদের উল্লাসেই যেন চাপা পড়ে গেলো সূর্যের উত্তাপ।
হাতে ঢোল-তবলা নিয়ে শিক্ষাঙ্গণের মাঠে সদ্য এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের এই উল্লাসই বলে দিচ্ছে তাদের খুশির মাত্রা।
রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ চত্বরে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেলো। দুপুর ১টার পরপরই মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল পেয়ে যায় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, এবার এই প্রতিষ্ঠানে মোট ৬১০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ৬০৮ জন। বাকি দু’জন পরীক্ষা দেননি। সে অনুযায়ী পাসের হার শতভাগ বলাই যায়। মোট জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৫৬৪ জন।
এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের ৫৩৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৫১৪ জন। আর বাণিজ্য বিভাগের ৭৫জনের মধ্যে ৫০ জন পেয়েছেন জিপিএ ৫।
আনুষ্ঠানিক ফলাফল আসার আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের উল্লাসটা লেগেই ছিল। মোবাইল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেকেই শিক্ষকদের ঘোষণার আগেই জেনে যান কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট। তাই ফল পাওয়া মাত্র ফেটে পড়ছিলেন আনন্দে। কেউ শূন্যে লাফাচ্ছিলেন, কেউবা বাবা-মা বা প্রিয় বন্ধুকে জড়িয়ে ধরে সেলফি তোলা বা উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন।
তবে, এর ভিন্ন চিত্রও চোখে পড়লো। কোনো কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবককে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। শত ভাগ পাসের প্রতিষ্ঠানে এমন কান্নার রহস্য খুঁজতে গিয়ে জানা গেলো একটুর জন্য জিপিএ ৫ কিংবা গোল্ডেন ৫ (সব বিষয়ে এ প্লাস) মিস হওয়ার কারণেই তাদের এমন আফসোস।
তবে তুলনামূলকভাবে বাণিজ্য বিভাগের ফলাফল খারাপ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। ৭৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ পাননি ২৫ জন।
একজন শিক্ষক বললেন, ‘বাণিজ্য থেকে এ প্লাস পাওয়া একটু কঠিন হলেও মনোযোগ দিয়ে পড়লে কোনো কিছুই কঠিন না। তবে এখনকার শিক্ষার্থীরা সেই কষ্ট করতে রাজি না। আবার শাস্তি দেওয়ার বিধানও নেই। ’
এদিকে যারা এই কঠিন ধাপ সাফল্যের সঙ্গে পাস করেছেন তাদের মুখে শোনা গেল ভবিষ্যতের স্বপ্ন। তাদের অভিভাবকদের চোখে গর্বিত চাহনি।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী মাহিরা ইবনাত জয়তু বাংলানিউজকে বলেন, ‘অনেক দিনের পরিশ্রমের ফসল আজকের এই ফল। এ পরিশ্রম শুধু আমার না, আব্বু-আম্মু আর আর শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সবার। এই ফল আমার আগামী দিন চলার পথের অনুপ্রেরণা। ’
শিক্ষার্থীদের আনন্দ উৎসবের মাঝেই বেরিয়ে আসেন রাজউক কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম সালেহীন।
তিনি এই ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের অভিনন্দন জানান।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম সালেহীন বলেন, আজকের ফলাফল সকলের সমন্বিত প্রয়াসের ফল। আমি আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত সাফল্য কামনা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৬
জেপি/এএটি/এমএ