ঢাকা: কয়েক বছর আগেও পাবলিক পরীক্ষার কেন্দ্রীয়ভাবে ফলাফল প্রকাশের পর অপেক্ষা করতে হতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় হাতে আসতো কাঙ্ক্ষিত ফল। এখন নিমিষেই পরীক্ষার্থীর হাতের নাগালে যাচ্ছে বিস্তারিত ফল।
এই প্রক্রিয়ায় ফল হাতে পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে, আগামী ২৬ মে।
ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে কেন্দ্রের ঘোষিত সময়ের সাথে সাথেই পূর্ণাঙ্গ ফল হাতে পাচ্ছেন ফল প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। এটি সম্ভব হয়ে উঠেছে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগের কারণেই।
বুধবার (১১ মে) সকাল ১০টায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলের সার-সংক্ষেপ হস্তান্তরের পর বেলা ১টায় সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পরই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ফল হাতে পান শিক্ষার্থীরা।
দ্রুতই ফল হাতে পাওয়ার বিষয়টি গণভবনে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ডিজিটাল এই বাংলাদেশে আগের মতো আর পরীক্ষার ফল পেতে শিক্ষার্থীদের ছুটতে হয় না, এখন ঘরে বসেই ফল জানা যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোথাও গিয়ে অপেক্ষা করে, পয়সা খরচ করে ফল দেখতে হবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন এসএমএস’র মাধ্যমেই ফল জানা যাচ্ছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন ঝালকাঠি ও পঞ্চগড়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে। ফল প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা তাদের মনোভাব তুলে ধরে। আর প্রধানমন্ত্রীও তাদের সঙ্গে আনন্দ অনুভূতি ভাগাভাগি করেন।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জানায়, ২০১১ সালে প্রথমবার পেপারলেস ফল প্রকাশের উদ্যোগ নেয় সরকার। প্রথমবার কিছুটা ঝুঁকি হলেও এখন আর সেই অসুবিধা নেই।
সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এবারও পেপারলেস ফল প্রকাশিত হচ্ছে।
বিভিন্ন বোর্ড থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত সময়ে ফলাফল পৌঁছে গেছে, যোগ করেন নাহিদ।
রাজধানীসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও আর আগের মত ফল দেখার সেই অপেক্ষা ছিলো না। তবে সহপাঠী আর শিক্ষকদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে স্কুলে ছিলো শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি।
এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ৯ মে’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৬ মে থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। গতবারের মতো এবারও অনলাইন এবং এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
আগামী ৯ জুন পর্যন্ত আবেদন করে প্রথম মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৬ জুন। বিলম্ব ফি ছাড়া ১৮ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে। ক্লাস শুরু হবে আগামী ১০ জুলাই।
গতবার ৫ প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারলেও অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতা এড়াতে এবার করা হয়েছে ১০টি। একই সাথে প্রার্থীর ১০টি কলেজের মেধা অবস্থান প্রকাশ করা হবে।
এবারও অনলাইনে আবেদন করলে ১৫০ টাকা এবং এসএমএস আবেদনে ১২০ টাকা ফি দিতে হবে।
বিলম্ব ফি দিয়ে আগামী ১০-২০ জুলাই পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে।
অন্যান্য কোঠা ঠিক রেখে এবার প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য দশমিক ৫ শতাংশ ও বিকেএসপি থেকে যারা পাস করে আসবে তাদের জন্যও দশমিক ৫ শতাংশ কোঠা সংরক্ষিত থাকবে।
ভর্তি বাণিজ্য এড়াতে গত বছর একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে প্রথমবার ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। বুয়েটের তত্ত্বাধানে গতবারও বেশ জটিলতার মুখে পড়ে ভর্তি প্রক্রিয়া। এবার জটিলতা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী।
কলেজে যে পরিমাণ আসন রয়েছে তাতে ভর্তির পরও আসন ফাঁকা থাকবে বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৬
এমআইএইচ/আরআইএস/এটি