খুলনা: এবার শিক্ষার্থী ধরতে খুলনায় নতুন ফাঁদ পেতেছে বিতর্কিত সাইফুরস কোচিং। IELTS মেলা -২০১৬ এর বিজ্ঞাপনী লিফলেট ও মাইকিং এ বিতর্কিত বক্তব্য প্রদান করায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সমালোচিত হচ্ছে কোচিংটি।
১৭ মে খুলনা মহানগরীর ৬১, শামসুর রহমান রোডের খুলনা শাখায় এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
মেলার প্রচারণা লিফলেটের একাংশে লেখা হয়েছে- ওবামার কাছে যেমন Spoken শেখা যাবে না, প্রিন্স চার্লসের কাছে IELTS কোচিং করে লাভ হবে না, তেমনি কলেজ/ভার্সিটির ইংরেজি শিক্ষকের কাছে Spoken বা IELTS করেও লাভ হয় না, কারণ English –এ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের সিলেবাসে Spoken বা IELTS না থাকাতে তাঁরা তো এসব পড়াতে অত্যস্ত না। এগুলো গীবত নয়, বাস্তবতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া!
Skill Test -এ মেলায় অংশ নিয়ে জিতে নিন ৭৫% পর্যন্ত স্কলারশিপে IELTS কোর্স করার দুর্লভ সুযোগ। IELTS সেরা স্কোর নিয়ে এখন মালয়েশিয়াতে খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ছি। ছবি দিয়ে এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য এমনভাবে প্রচার করা হয়েছে।
সচেতন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, লিফলেটের বক্তব্য মূলত মেলার নামে শিক্ষার্থী ধরার নতুন ফাঁদ। এর আগে বিতর্কিত বিজ্ঞাপন তৈরি ও প্রচার নিয়ে ইংরেজি শিক্ষার কোচিং সাইফুর’স এর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা পড়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দুদকে সাইফুর’স এর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের জন্য লিখিতভাবে সুপারিশ করা হয়েছে। সেখানে কোচিং সেন্টারটির অনিয়ম-দুর্নীতির অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়।
এছাড়া সম্প্রতি রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত ২০১৫ সালের পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের ব্যানারে সাইফুর’স কোচিং এর (সাইফুর’স) নাম থাকায় অনুষ্ঠানস্থলে এসেও অনুষ্ঠানে অংশ নেননি আইনমন্ত্রী।
একই কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকও এ অনুষ্ঠানে অংশ নেননি। এমনকি শিক্ষামন্ত্রীও কোচিংটির অনিয়ম নিয়ে ক্ষিপ্ত।
এসব অনিয়মের কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে অসংখ্য প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় এখন তারা খুলনায় মেলার নামে ছাত্র ধরার ফাঁদ পেতেছে এমনটি বলছেন অভিভাবক মহল।
আল-আমিন মোল্লা নামের এক অভিভাবক বলেন,মেলার বিজ্ঞাপনটি হাস্যকর। বিজ্ঞাপনের ভাষায় শিক্ষকদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করা হয়েছে। ইংরেজি শিক্ষার এই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি রাতারাতি কাউকে ‘ইংরেজির জাহাজ’ বানানোর প্রলোভন দেখালেও ফলাফল কার্যত শূন্য হয়ে থাকে।
অনিক নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সাইফুরস নিয়ে নানা সমালোচনা রয়েছে। তারপরও এ কোচিংটি খুলনায় কিভাবে বাণিজ্য করছে বুঝতে পারছি না।
সমালোচিত এই কোচিং সেন্টারের খুলনা শাখার পরিচালক এস কে হিমু সোমবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে বাংলানিউজকে বলেন, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একাডেমিক ভালো বোঝেন IELTS কিংবা স্পোকিং ভালো বোঝেন না। আমরা বিজ্ঞাপনের লিফলেটে সেটা বলেছি। আর শিক্ষার্থীদের IELTS ও স্পোকিং ইংলিশ এর গুরুত্ব বোঝাতে এ মেলার আয়োজন করেছি।
বিনয়ের সুরে তিনি বলেন, বস বিকেলে বা কালকে আসেন। আসলে কথা হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের পরিচালক টিএম জাকির হোসেন দুপুর ১ টা ৪৮ মিনিটে বাংলানিউজকে বলেন,বিতর্কিত কোচিংটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। আমি এ বিষয়টি নিয়ে এখনই এডিসি মহোদয়ের সাথে কথা বলবো।
বাংলাদেশ সময় : ১৪৩৩ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৬
এমআরএম/আরআই