ঢাকা: অবশেষে সদ্য জাতীয়করণকৃত রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম পদসহ সকল শূন্যপদে প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মো. আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত নির্দেশ দেশের ৬১ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের পাঠানো হয়েছে।
আনোয়ারুল হক বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) বাংলানিউজকে বলেন, মাঠ পর্যায়ে বিভ্রান্তি দূর করতে দ্বিতীয়দফায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত ৬ জুন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিলেও পঞ্চমপদে শিক্ষদের নিয়োগ দিচ্ছিলো না তারা।
প্যানেল শিক্ষকরা দাবি করছিলেন, পঞ্চমপদে নিয়োগের আদেশ না দেওয়ায় ৫ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ পাবে না। অথচ এই শিক্ষকের সংখ্যা ২৮ হাজার।
দ্বিতীয় দফায় পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের আদেশ অনুযায়ী জাতীয়করণকৃত ২২ হাজার ৯২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে একটি করে প্রধান শিক্ষক ও চারটি সহকারী শিক্ষকের পদ রাজস্বখাতে সৃজন করা হয়েছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের সম্মতি রয়েছে।
“বর্ণিত অবস্থায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের পদের চাহিদা মোতাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবরের স্মারকবলে প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া যাবে। ”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছাড়াও ৬১ জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় উপ-পরিচালককে (প্রাথমিক শিক্ষা) চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক প্যানেল শিক্ষক ঐক্যজোটের সভাপতি রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখন সকল শূন্যপদে শিক্ষকরা নিয়োগ পাবেন। এ নির্দেশে তারা খুশি।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার প্রার্থী মিজানুর রহমান শাহ জানান, সরকারের নির্দেশে দীর্ঘ দিনের আন্দোলন এবং জটিলতা কাটলো।
রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি (নিয়োগ, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা ও কল্যাণ) নীতিমালা-২০০৯ অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১০ সালের ২১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগের জন্য ৪২ হাজার ৬১১ জনের একটি প্যানেল প্রস্তুত করা হয়। ওই প্যানেল থেকে এরই মধ্যে ১০ হাজার ৫১৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ঝুলে থাকার মধ্যে তা নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যান প্রার্থীরা।
পরে এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয় গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। উচ্চ আদালত রিট পিটিশন ও রিভিউ পিটিশন খারিজ করে নীতিমালা তৈরি করে নিয়োগ দিতে বলায় নিয়োগ উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়।
‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১০’ এ ৪২ হাজার ৬১১ জনের মেধাক্রম তালিকা ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। এরপর ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণের ঘোষণা দেওয়ার পর সেই প্যানেল থেকে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেই জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাবেন তারা।
প্যানেল শিক্ষক ঐক্যজোটের সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, এসব পদে প্রায় ২৫-২৮ হাজার প্রার্থী রয়েছেন। এর আগে আইনি লড়াইয়ে নওগাঁয় ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে সাত জন যোগদান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৬ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৬
এমআইএইচ/বিএস