ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্যানেল শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অর্থ লেনদেন এবং মেধা তালিকা হেরফের করা নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
এ ধরনের ঘটনা ঘটলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য সরবরাহের পরামর্শ দিয়ে সতর্কতা জারি করেছে।
সোমবার (১৩ জুন) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ২১ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল প্রকাশিত উপজেলাভিত্তিক মেধাক্রম অনুসারেই সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেবল শূন্যপদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
‘এক্ষেত্রে কোনো তদবির করে বা অর্থের বিনিময়ে বা অন্য কোনো উপায়ে প্রকাশিত মেধাক্রম পরিবর্তনপূর্বক নিয়োগ পাওয়ার সামান্যতম সুযোগ নেই। ’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রকাশিত মেধাক্রম তালিকা হতেই সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। কোনো ধরনের লেনদেন করে প্রতারিত হবেন না।
এ জাতীয় লেনদেন করলে এর তথ্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ই-মেইলে ([email protected]) জানিয়ে দিন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ৯ জুন সদ্য জাতীয়করণকৃত রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম পদসহ সকল শূন্যপদে প্যানেল শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দেয়।
এর আগে, গত ৬ জুন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দিলেও পঞ্চম পদে শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছিলো না তারা।
দ্বিতীয় দফায় পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের আদেশ অনুযায়ী জাতীয়করণকৃত ২২ হাজার ৯২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে একটি করে প্রধান শিক্ষক ও চারটি সহকারী শিক্ষকের পদ রাজস্বখাতে সৃজন করা হয়েছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের সম্মতি রয়েছে।
‘বর্ণিত অবস্থায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের পদের চাহিদা মোতাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবরের স্মারকবলে সৃজিত পদে প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া যাবে। ’
রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি (নিয়োগ, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা ও কল্যাণ) নীতিমালা-২০০৯ অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১০ সালের ২১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগের জন্য ৪২ হাজার ৬১১ জনের একটি প্যানেল প্রস্তুত করা হয়। ওই প্যানেল থেকে এরই মধ্যে ১০ হাজার ৫১৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ঝুলে থাকার মধ্যে তা নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলন এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যান প্রার্থীরা।
পরে এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয় গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। উচ্চ আদালত রিট পিটিশন ও রিভিউ পিটিশন খারিজ করে নীতিমালা তৈরি করে নিয়োগ দিতে বলায় নিয়োগ উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়।
‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১০’- এ ৪২ হাজার ৬১১ জনের মেধাক্রম তালিকা ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। এরপর ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণের ঘোষণা দেওয়ার পর সেই প্যানেল থেকে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়।
এখন সেই জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাবেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৬
এমআইএইচ/এইচএ/