ঢাকা: অরিন আরাহা, ১০,’র খুব মন খারাপ। ব্রিটিশ কাউন্সিলের বই পড়া প্রতিযোগিতায় এবার তার অংশ নেওয়া হচ্ছে না।
তবে অরিনদের চেয়েও অনিশ্চয়তায় রয়েছে অনেকে যারা ব্রিটিশ কাউন্সিলে ইংলিশ ল্যাঙুয়েজ কোর্স করেন। এই কোর্সের নতুন টার্ম শুরু হওয়ার কথা ছিলো ৬ আগস্ট (শনিবার)। যার প্রক্রিয়া অনেকটা সম্পন্ন হয়েছিলো। তবে হঠাৎই এই টার্মের ক্লাশ স্থগিত করা হয়েছে। কোর্সে যারা ভর্তি হয়েছেন তারা মোটেই নিশ্চিত হতে পারছেন না কবে এই টার্ম শুরু হবে।
আর সবচেয়ে বড় অনিশ্চয়তায় রয়েছে সেই শিক্ষার্থীরা যারা এবছর ক্যামব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এক্সামিনেশন (সিআইই) নিয়ে। আগামী নভেম্বরে এই পরীক্ষা। যার রেজিস্ট্রেশন ছিলো চলমান। হঠাৎ করেই ঢাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। আগামী ৫ আগস্ট এই পরীক্ষার জন্য নিবন্ধনের শেষ তারিখ ছিলো।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ঢাকা কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে, সেখান থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন সিআইই’র জন্য রেজিস্ট্রেশনের তারিখ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন চালু রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বুক রিডিং আর ইংলিশ ল্যাঙুয়েজ কোর্স অাপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে, কাউন্সিল খোলার পর সেগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
কবে নাগাদ খুলতে পারে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু জানাতে পারেননি তিনি। বললেন, এটা বলা সম্ভব নয়। তবে যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা অফিসের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স আরশিয়া আজিজ জানান, নিরাপত্তার কারণেই ব্রিটিশ কাউন্সিলের সেন্টারগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেই সেন্টারগুলো খুলে দেওয়া হবে, স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে।
সে লক্ষ্যে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কোনও উদ্যোগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, কাউন্সিলের নিজস্ব উদ্যোগে নিরাপত্তা পর্যালোচনার কাজ শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহের পুরোটা জুড়েই এই পর্যালোচনার কাজ চলবে। আর পর্যালোচনা রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত হবে, কখন খুলে দেওয়া যাবে কাউন্সিলের সেন্টারগুলো।
একজন দেশীয়, একজন আঞ্চলিক ও একজন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত টিম এই এই নিরাপত্তা পর্যালোচনার কাজ করছেন বলে জানান আরশিয়া আজিজ।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও তারা অনলাইনে কার্যক্রম সচল রেখেছেন। অনলাইনে সিআইই’র রেজিস্ট্রেশন চলছে। ফেসবুক পেজেও সার্বক্ষণিক আপডেট দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
আরশিয়া আজিজ জানান, বন্ধ ঘোষণার পর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ৪০০টি লাইভ চ্যাট হয়েছে। আড়াই হাজারেরও বেশি ই-মেইলের জবাব দিয়েছে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ কাউন্সিল।
সম্প্রতি গুলশান, শোলাকিয়ায় ও কল্যাণপুরে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই ব্রিটিশ কাউন্সিল বন্ধ করা হয়েছে এবং প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ব্রিটিশ কাউন্সিল সেন্টারগুলোতে যান। তাদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বিশ্বের দেশে দেশেই সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে, সেসব দেশে ব্রিটিশ কাউন্সিল বন্ধ করা হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তর তার জানা নেই বলেই জানান আরশিয়া আজিজ।
ফেসবুকে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ফ্যানপেজেও এমন একটি প্রশ্ন এসেছে শিবলি সাদিক নামে একজনের কাছ থেকে। তার প্রশ্ন ছিলো প্যারিস, নিসসহ ফ্রান্সের অন্যান্য শহরে তাদের সেন্টার বন্ধ করেছে। তার এই প্রশ্নের কোনও জবাব ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি।
বাংলানিউজের পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছে যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রধান কার্যালয়ের কাছে। বাংলানিউজের পাঠানো ই-মেইল বার্তার তাৎক্ষণিক জবাবে জানানো হয়েছে তিন কর্মদিবসের মধ্যে উত্তর দেওয়া হবে। উত্তর পেলে বাংলানিউজের পাঠকদের তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশি পাহারায় ব্রিটিশ কাউন্সিল, অাইএলটিএস নিবন্ধন চলছে
বাংলাদেশ সময় ১১১০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৬
এমএমকে