খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই এসোসিয়েশনের সদস্য-সচিব ও রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার। ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন’ নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে দু’টি গ্রুপ থাকায়
আবু বকর সিদ্দিকের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটরা।
আগামী ২০ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের তালিকাভুক্তি এবং নবায়নের কাজ গত ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়ার তিন বছর পরে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিবন্ধিত হয়ে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট সদস্য হন। তারাই সিনেট নির্বাচনে ভোট দিয়ে ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট সদস্যকে সিনেটে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সিনেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারণী ফোরাম সিনেট গঠনে এই নির্বাচন স্বাভাবিকভাবেই বেশ গুরুত্ব বহন করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক যিনি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারেরও দায়িত্ব পালন করবেন তিনি সরকারপন্থি শিক্ষকদের একটি অংশের আজ্ঞাবহ। সেই আজ্ঞাবহ অংশের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন এর সদস্য-সচিব হয়েছেন। এই এলামনাই এসোসিয়েশন গঠন প্রক্রিয়া নিয়েও রয়েছে বিতর্ক।
রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হওয়ার পরও তিনি এলামনাই এসোসিয়েশনের কাজে কয়েকটি জেলায় গিয়েছেন। এলামনাই এসোসিয়েশনের কাজের কথা বলা হলেও মূলত রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনই তার সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিলো। কারণ এলামনাই এসোসিয়েশনের সদস্যরা রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট তালিকাভুক্ত হয়ে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে এলামনাই এসোসিয়েশনের পদে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করা ঠিক হবে না। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এলামনাই এসোসিয়েশনের পদে থাকাও উচিত না।
প্রশ্নবিদ্ধ এলামনাই এসোসিয়েশনের পদে থেকে উনি আবার নির্বাচন পরিচালনা করবেন-এতে করে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে পাতানো নির্বাচনের ব্যাপারে।
তিনি বলেন, আমরা বিষয়গুলো পর্যবেক্ষন করছি। পাতানো এই নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহন করবো কি না সে ব্যাপারে আমাদের কোরাম মিটিং এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে এসব অভিযোগ সম্পর্কে রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এলামনাই এসোসিয়েশনের সঙ্গে এই নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। আমি তো এলামনাই এ থাকতেই পারি। এতে নির্বাচনে এর কোন প্রভাব পড়বে না। নির্বাচনে যদি কোন পক্ষপাতিত্ব হয় সেক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে।
তিন বছর পর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দীর্ঘ ১৫ বছর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে নির্বাচিত রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হয় ২০০১ সালের ১ জুন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৭
আরআই