ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

র‌্যাগিং চলছেই....

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
র‌্যাগিং চলছেই....

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: র‌্যাগিংয়ের নামে নতুন শিক্ষার্থীদের ওপর নিত্যদিনই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে জাবিতে। নানামুখী সমালোচনা, বিভিন্ন সংগঠনের র‌্যাগিং বিরোধী অবস্থান ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কড়া নজরদারির কারণে আবাসিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রবণতা কিছুটা কমে এলেও সম্প্রতি বিভিন্ন হলের গণরুমে ফের শুরু হয়েছে লাগামহীন র‌্যাগিং।

নতুন শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশী অভিযোগ ৪৫তম ব্যাচের ইমিডিয়েট সিনিয়রদের বিরুদ্ধে।

র‌্যাগিংয়ের নামে তারা নতুন শিক্ষার্থীদের মা-বাবা তুলে গালি দিচ্ছে।

কান ধরে লাফাতে আর ৬০ ভোল্টেজের লাইটের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকতে ‍বাধ্য করছে। দাঁড় করিয়ে রাখছে সংসপ্তক হয়ে (বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এক পা কাটা ও অন্যহাতে অস্ত্র ধরা ভাষ্কর্য)। বানানো হচ্ছে মুরগী বা ব্যাঙ। বাধ্য করছে জানালার রড ধরে ঝুলে থাকতে।

হালে অশ্লীল বিষয় নিয়ে ডিবেট করানো র‌্যাগিংয়ের নিয়মিত আইটেম হয়ে উঠেছে। এছাড়া চালানো হচ্ছে আরো নানা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

দিনের পর দিন এমন নির্যাতন সয়ে অনেক শিক্ষার্থীই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। নির্যাতন সইতে না পেরে হলও ছেড়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। প্রথম বর্ষের (৪৬তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের তাই অসহনীয় সময় কাটছে জাহাঙ্গীরনগরে।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  প্রতি রাতে বিভিন্ন হল থেকে একাধিক শিক্ষার্থী র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিতে আসে। ঠিক সময়ে খেতে না পারায় পেটের সমস্যা লেগেই থাকে তাদের। রাত জেগে র‌্যাগ দেওয়ার কারণে ঠাণ্ডা জ্বরেও আক্রান্ত হতে হয় অনেককে। শারীরিক দুর্বলতার কারণে অনেকে অজ্ঞানও হয়ে পড়েন।  

গত ৯ মার্চ থেকে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়। বিগত এই কয়েকদিনে প্রতি হল থেকে প্রায় ২৫-৩০ জন র‌্যাগিংয়ের কারণে অসুস্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছে বলে হল সূত্রে জানা যায়।

র‌্যাগিংয়ের শিকার এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু এ কোন জাহান্নামে এলাম! প্রতি মুহূর্তে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে এখানে। কিন্তু আমরা তো কোন অপরাধ করি নাই। আমাদের কেনো এভাবে শাস্তি দেওয়া হবে?

গত ২১ মার্চ প্রাধ্যক্ষ কমিটির জরুরি সভায় প্রয়োজনে হলের শিক্ষকরা রাত পর্যন্ত হলে অবস্থান করবেন বলে নির্দেশ দেওয়া হলেও কার্যত তার বস্তবায়ন হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নবাগত শিক্ষার্থীদের উপর এ ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন কখনো কাম্য হতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ বলেন, আমরা মিটিং করে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাতে র‌্যাগিং যাতে না হয় সেটা হল প্রশাসনকে সেটা দেখতে বলে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।