ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

চট্টগ্রাম লাইব্রেরিতে বৃহস্পতিবারও পড়তে চায় পাঠক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১১ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৭
চট্টগ্রাম লাইব্রেরিতে বৃহস্পতিবারও পড়তে চায় পাঠক চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাবলিক লাইব্রেরিতে বই খুঁজছেন এক পাঠক। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের পাঠকরা বৃহস্পতিবারও পড়তে চায়। কয়েক বছর ধরে শুক্রবারের পাশাপাশি বৃহস্পতিবারও বন্ধ রাখার রেওয়াজ চালু হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ ও প্রবীণ পাঠকরা।

রোববার (৩০ এপ্রিল) সকালে সরেজমিন পরিদর্শনকালে বাংলানিউজকে তারা এ অসুবিধার কথা জানান।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এমবিএ চূড়ান্ত পর্বের ছাত্র নাহিদুল আলম।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন- আমার প্রশ্ন, বৃহস্পতিবার বিভাগীয় গণগ্রন্থাগার বন্ধ থাকবে কেন? অবশ্যই বৃহস্পতিবার খোলা রাখা উচিত। একই সঙ্গে সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত পাঠকক্ষ খোলা রাখার যে নিয়ম তাতেও পরিবর্তন আনা উচিত। সময়টা সকাল নয়টা থেকে রাত রাত ১০টা পর্যন্ত করলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হয়।

তিনি জানান, চবি ক্যাম্পাস থেকে ফিরতে ফিরতে বিকেল তিনটা পার হয়ে যায়। এরপর যদি রাত সাড়ে সাতটা থেকে গণগ্রন্থাগার বন্ধ হতে শুরু করে তবে পড়বো কখন? তাই রাত ১০টা করলে ভালো হয়। চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরিতে অধ্যয়নরত পাঠক।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

চবির অর্থনীতির (স্নাতকোত্তর) ছাত্র ফয়সাল কবিরও মনে করেন, গণগ্রন্থাগার রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা উচিত।

জাপান প্রবাসী মো. ওমর ফারুক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমত, বৃহস্পতিবার গণগ্রন্থাগার বন্ধ থাক তা চাই না। দ্বিতীয়ত, রাত আটটার পরিবর্তে অন্তত নয়টা পর্যন্ত পড়তে চাই। দরকার হলে সকাল আটটার পরিবর্তে নয়টায় লাইব্রেরি খোলা হোক।

পাঠকদের অভিযোগ, তিন বছর ধরে ফটোকপি মেশিন নষ্ট থাকায় গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স টুকে নিতে কর্মঘণ্টার অপচয় হচ্ছে। এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের সময় ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয় সন্ধ্যাবেলা। তাই একটি জেনারেটর থাকা উচিত। সবচেয়ে বড় কথা, হালনাগাদ রেফারেন্স বইয়ের অভাবটা বেশি। সেলফে অনেক পুরোনো বই আছে, কিন্তু পাঠকের কাজে আসে না। চারতলা ভবনের সিঁড়ি, বইয়ের তাক, বইয়ের প্রচ্ছদসহ পুরো গ্রন্থাগারটিই অপরিচ্ছন্ন। ধুলোবালির আস্তরণ জমে আছে সবখানে। চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরিতে বইয়ের তাক।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

এ প্রসঙ্গে প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান কাম ডেপুটি ডিরেক্টর মো. রিয়াজ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ফটোকপি মেশিন ও জেনারেটর বরাদ্দ দেওয়ার জন্য গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারে বই কেনার কোনো বাজেট থাকে না। ঢাকায় গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর নতুন বই কিনে বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারে সরবরাহ করে থাকে। এক্ষেত্রে আমরা শুধু পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী সুপারিশই করতে পারি।

ধুলোবালির আস্তরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ৪২ পদের এ গণগ্রন্থাগারে বর্তমানে মাত্র ২০ জন কর্মরত আছেন। হিসাবরক্ষকসহ পাঁচজন বেতন নেন চট্টগ্রাম থেকে। কিন্তু কাজ করেন অন্য বিভাগে। বর্তমানে আছেন মাত্র দুজন গেজেটেড, ৭ জন তৃতীয় শ্রেণির এবং বাকিরা চতুর্থ শ্রেণির। কোনো রকমে কাজ চালিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও জ্ঞানভিত্তিক সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি সীমিত সম্পদ ও জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দিতে।

তিনি জানান, ১৯৬০ সালের ২০ ডিসেম্বর স্বল্প পরিসরে গ্রন্থাগারটি যাত্রা শুরু করে। ১৯৮০-৮৮ সালে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে মুসলিম ইনস্টিটিউট সংলগ্ন চার তলা ভবনটি নির্মাণ করে। ১৯৮৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৪৬ হাজার বর্গফুটের নতুন ভবনটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বর্তমানে ৯৫ হাজার ২৩০টি বই আছে। চারটি পাঠকক্ষে আসন আছে ৩২০টি। ১৯৯৭ সালের ভূমিকম্পে গ্রন্থাগার ভবনে ফাটলের সৃষ্টি হয়। মুসলিম ইনস্টিটিউট, শহীদ মিনার এবং গণগ্রন্থাগার নিয়ে যে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের পরিকল্পনা হয়েছে সেটি বাস্তবায়িত হলে পাঠকের সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
এআর/টিসি/জেডএম
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।