বুধবার (৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্যাডে লিখিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাত সাড়ে ৮টায় এ প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাদ আন্দালিবের কাছে বেশ কয়েকটি সুপারিশ জমা দেওয়া হয়েছে।
আইন বিভাগের অধ্যাপক ফারহান উদ্দিন আহমেদের অব্যাহতিকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
গত ৫ আগস্ট ফারহান উদ্দিন আহমেদকে বহাল এবং রেজিস্ট্রার মো. শাহুল আফজালকে দীর্ঘ মেয়াদে ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রেজিস্ট্রার অবৈধ জোর খাটিয়েছেন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে তাকে অব্যাহতির সুপারিশ করে অনুসন্ধান কমিটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গত ৩ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কমিটি এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্মপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদনে দেওয়া প্রধান সুপারিশসমূহ সবাইকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অনুসন্ধান কমিটি নিম্নলিখিত দুটি প্রধান সুপারিশ দেন যা প্রতিবেদন থেকে হুবহু তুলে ধরা হলো।
প্রথম সুপারিশ: ‘আমরা মনে করি (বিশ্ববিদ্যালয়) রেজিস্ট্রার কোনো ব্যক্তিকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটক করে রাখার উদ্দেশে কাউকে আদেশ দেওয়ার আইনগত অধিকার রাখেন না। আরেকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আগ্রাসী ও উস্কানিমূলক শব্দ উচ্চারণের জন্য তাকে (রেজিস্ট্রারকে) তিরস্কার করা উচিত।
এতে তিনি অবৈধ জোর খাটিয়েছেন। যেহেতু রেজিস্ট্রার নিজে অথবা অন্য ব্যক্তিকে আদেশ দেওয়ার মাধ্যমে ফারহান উদ্দিন আহমেদকে অবৈধভাবে আটকে রাখার আইনগত অধিকার রাখেন না, সেহেতু আমরা তার পদত্যাগ সুপারিশ করছি।
এক্ষেত্রে (এ সুপারিশের ক্ষেত্রে) তিনি অপারগ হলে তাকে আইন অনুসরণপূর্বক অব্যাহতি দেওয়া উচিত হবে।
দ্বিতীয় সুপারিশ: আমাদের সুপারিশ হচ্ছে, ফারহান উদ্দিন আহমেদের অব্যাহতি/স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত বিষয়াদির সমাধান তার একাডেমিক গবেষণা, শিক্ষকতা-মূল্যায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি দায়িত্ব পালন, সামাজিক দায়িত্ব পালন এবং আত্মবিকাশের ওপর ভিত্তি করে হওয়া প্রয়োজন। তার নিয়োগপত্রের ৭ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে এবং প্রফেশনাল ডেভেলাপমেন্ট সেন্টার (ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন)-এর মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে তাকে অব্যাহতি দেওয়া যাবে না।
অনুসন্ধান কমিটি কর্তৃক দেওয়া প্রধান সুপারিশ দুটি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যতো দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এছাড়া, কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ও নির্দেশনাবলিতেও পরিবর্তনের জন্য কিছু সুপারিশ করেছে। এ দীর্ঘমেয়াদি প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা পরিবর্তনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নেও যথাসময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম ইউসূফ হায়দার ও অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলামসহ পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট পুনর্গঠিত এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আফসান চৌধুরী, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট তাজদিন হাসান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মাইমুনা সৈয়দ আহমেদ।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে মিডিয়া এনগেজমেন্ট, কমিউনিকেশন্স, ব্র্যাকের ফজলুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ স্বার্থ সংরক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করবেন।
তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফজলুল ইসলামকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৭
এমআইএইচ/আরআইএস