চিকিৎসকরা বলছেন, এটি মানসিক সমস্যার ফল বলে ধারণা করা হলেও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে শিক্ষার্থীদের রক্ত পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
উপজেলার প্রত্যন্ত ইউনিয়ন পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন।
স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, আক্রান্ত হওয়ার আগে শিক্ষার্থীদের শরীরে খিঁচুনি দেখা দেয়। এ সময় তারা অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। পরে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করালে সুস্থ হয়। এভাবে একের পর এক শিক্ষার্থী আক্রান্ত হলেও এ রোগ প্রতিরোধ ও কারণ উদ্ঘাটন করা যাচ্ছিল না।
এভাবে বুধবার (০৯ আগস্ট) পর্যন্ত চলার পর বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) থেকে স্কুলটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ওই পাঁচদিনে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সন্তোষ কুমার সরকার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, যারা অসুস্থ হয়েছিল, তাদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সকলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।
তিনি বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীদের ‘ম্যাস সাইকোসিস ডিজিস’ দেখা দেয় বলে আমাদের ধারণা। দুই বছর আগে আফ্রিকার দেশগুলোতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমনটি হয়েছিলো। আর যদি তা না হয়, তবে আমাদের ধারণা, কেউ শিশুদের মাঝে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। যার ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে ওই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এবং তারা স্কুলে এসেই সে বিষয়টি কল্পনা করে অসুস্থ হয়ে পড়ছিল’।
এদিকে চারদিন ধরে বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়টির পড়ালেখা বন্ধ রয়েছে। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামসুল আরেফিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কেন অসুস্থ হয়ে পড়ছে, তা আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। বর্তমানে সিমটমটা বেশি থাকায় সাতদিনের জন্য স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। আশা করি, সাতদিনের মধ্যে কারণ উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে’।
আগামী বুধবার (১৬ আগস্ট) স্কুল খুলবে বলেও জানান তিনি। তখন চিকিৎসকদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করা হবে। খুব শিগগিরই এ সমস্যা থাকবে না বলেও মনে করছেন তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদ সিকদার বলেন, ‘গত ৩/৪ মাসে আগেও কয়েকজন শিক্ষার্থী হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো। তাদের নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। ইদানিং আবার সে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে কি কারণে, তা বলা যাচ্ছে না’।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
এএসআর