ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

দেশে এখনও পাকিস্তানি চেতনা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে

জবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
দেশে এখনও পাকিস্তানি চেতনা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে বক্তব্য রাখছেন ড. মীজানুর রহমান

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। তিনি বলেছেন, এখনও বাংলাদেশে পাকিস্তানের চিন্তা-চেতনা রপ্তানির চেষ্টা চলছে।

বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘গণমাধ্যম ও ১৫ আগস্ট’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল সাংবাদিকদের সংগঠন জবি প্রেসক্লাব।

 

উপাচার্য বলেন, অনেকেই বলেন পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের আগে কেউ কেউ হয়তো জানতো, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হবে। বিষয়টা বঙ্গবন্ধুকে কেন জানানো হলো না, কারা কারা জানতো-- এসব বিষয় নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। তবে এটা জানতে একাত্তর থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত দেশের রাজনৈতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে জানতে হবে।  

‘পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাকে বন্দি করা হয় ক্যান্টনমেন্টে এবং এখনও বাংলাদেশে পাকিস্তানের চিন্তা-চেতনা রপ্তানির বা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। ’

তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে আমরা বিজয়ের প্রথম বর্ষ উদযাপন করি। বিজয়ের দ্বিতীয় বর্ষে জাসদ ১৬ ডিসেম্বরকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। আমরা যাকে বর্ষিয়ান নেতা মনে করি, সেই মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীও জাসদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ‘কালো দিবস’ পালন করেন।

ড. মীজানুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ৮৪ বাংলাদেশি সামরিক সৈন্য অংশ নেন। তাদের মধ্যে ৭৭ জন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। বাকি সাতজন ছিল মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে। পরবর্তীতে তারা বঙ্গবন্ধুর কাছে কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করে। বঙ্গবন্ধুই তাদের পুলিশের চাকরি দেন।  

উপাচার্য বলেন, দার্শনিক মিশেল ফুকোর মতে অধিকাংশ আত্মজীবনী নাকি লেখা হয় ‘রিকন্স্ট্রাকটিভ’ বা কিছুটা পুনর্গঠমূলকভাবে। তাই তিনি আত্মজীবনী পড়তেন না। কারণ কোনো বিশেষ পদধারী ব্যক্তি তার আত্মজীবনী তার বর্তমান অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে লেখেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু যখন তার আত্মজীবনী লেখেন, তখন তিনি বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেননি। এজন্য এই আত্মজীবনী পড়লে হয়তো ফুকো তার বক্তব্য পরিবর্তন করতেন।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. প্রিয়ব্রত পাল বলেন, আমি ১৯৭৫ সালের ২৬ জুলাই বঙ্গন্ধুর সঙ্গে দেখা করে ২৭ জুলাই মস্কো যাই। এর কিছুদিন পর জানতে পারি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খবর। এ খবর শোনার পর বিশ্বাসই হচ্ছিল না। যদি আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করি, তবে আমাদের মাঝে কোনো বিভেদ নয়, এখন দরকার ঐক্য।

জবি প্রেসক্লাবের সভাপতি সুব্রত মন্ডলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম শাহীনের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সভাপতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. অরুণ কুমার গোস্বামী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ, নীল দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, জবি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইমরান আহমেদ অপু, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রুবেল, জহির উদ্দীন আগুন, তানভীর রহমান খান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
ডিআর/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।