এ বছর দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ চালু করায় তিন লাখেরও অধিক শিক্ষার্থী আবেদন করেছে।
এদিকে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হচ্ছে বিভিন্ন জালিয়াত চক্র।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, চক্রগুলো এবার জালিয়াতির কৌশল পাল্টিয়ে কয়েকটি ধাপে প্রতারণা করার পরিকল্পনা করছে। এই চক্রের সদস্যদের কেউ মাঠ পর্যায়ে শিক্ষার্থী সংগ্রহ করে। আবার কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহায়তায় পরীক্ষার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে প্রশ্ন নেয়। আরেকটি পক্ষ বিভিন্ন কোচিংয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে দ্রুত প্রশ্নের সমাধান করে। এরপর মোবাইলে এসএমএস, ভাইবার বা অন্য কোনো ডিভাইসের
মাধ্যমে পরীক্ষার হলে উত্তর সরবরাহ করে। এছাড়াও পরীক্ষার হলে অন্য আরেকজনকে প্রক্সি হিসেবে পাঠিয়ে চান্স পাইয়ে দেওয়ারও চুক্তি করে চক্রগুলো।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষায় ডিভাইসের মাধ্যমে বড় ধরনের জালিয়াতি করার ছক আঁকছে চক্রগুলো। ভর্তি পরীক্ষার আগে অন্তত দুশ’টি ডিভাইস রাজশাহী শহরে ঢুকছে। ডিভাইসগুলো সূক্ষ্মভাবে ভর্তিচ্ছুদের কানের মধ্যে স্থাপন করে বাইরে থেকে ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর সরবরাহ করার পরিকল্পনা হাতে
নিয়েছে জালিয়াত চক্রগুলো।
প্রশাসনের কড়া নজরদারির পরও গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন চক্রের প্রায় অর্ধ শতাধিক সদস্যকে আটক করা হয়। তখন এসব চক্রের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়। কিন্তু তারপরও বহাল তবিয়তে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে চক্রগুলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সুজন আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবীরা আসবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রতিনিয়তই বিভিন্ন পরীক্ষায় জালিয়াতি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধাবী শিক্ষার্থী হারাচ্ছে। এটা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। ’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জালিয়াতি ঠেকাতে পরীক্ষার হলে মোবাইল, ক্যালকুলেটর, ঘড়িসহ সকল প্রকার ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের অনেকগুলো সেট করা হবে। যার ফলে আগে থেকে তৈরি করা উত্তরপত্র নিয়েও লাভ হবে না। প্রতারকরা শিক্ষার্থীদের ভর্তি করে দিতে বা প্রশ্ন দিতে পারবে বলে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে পারে। এজন্য প্রতারক চক্র থেকে
ভর্তিচ্ছুদের দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সব ধরনের জালিয়াতি ঠেকাতে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি রোভার স্কাউট, বিএনসিসি ও গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও সার্বক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, ২১ অক্টোবর, ২০১৭
আরএ