এই মুক্ত জানালা থেকে একটি লেখা হুবহু কপি-পেস্ট করে ভুলে ভরা বই ছাপিয়ে সোরগোল তুলেছেন একজন সাংবাদিক। লেখা চুরি করে ‘আপন আলোয় বিশ্বভুবন’ নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক একটি চটি বই প্রকাশ করেছেন।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত বইটিতে তথ্য বিভ্রাট এবং জাতির জনককে হেয় করায় নানা মহল থেকে সমালোচনার কারণে বিকুল চক্রবর্তী সম্পাদিত বইটির কপি ইতোমধ্যে জব্দ করা শুরু করেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন।
বিকুল চক্রবর্তী শিক্ষক বাতায়ন (https://www.teachers.gov.bd) থেকে একজন শিক্ষককের একটি লেখা চুরি করে বইটি সম্পাদনা করেছেন বলে বাংলানিউজের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। তবে মূল লেখা নিজের নামে চালাতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ও বানান ভুলই রেখে দিয়েছেন।
শিক্ষক বাতায়নে পোস্টটি করেছিলেন নাটরের মো. রাসেল নামে এক শিক্ষক। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি পোস্টটি অনলাইন থেকে কপি করে দিয়েছিলাম। আমার ভুল হয়েছে। এটা আমি সরিয়ে নেবো। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে কোনো বইয়ে তথ্যের পাশাপাশি বানানও ঠিক থাকা উচিত।
বাংলানিউজ বিষয়টি নজরে আনায় অনেক শিক্ষক এসব বিষয়ে সচেতন হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প ‘শিক্ষক বাতায়ন’ নামের পোর্টালটি পরিচালনা করে। এই পোর্টাল থেকে লেখা কপি-পেস্ট করে বই ছাপিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হেয় করার দুঃসাহসে হতভম্ব হয়েছেন এটুআইয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা।
এটুআইয়ের শিক্ষক বাতায়ন সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, তিনি অবুঝের মতো কাজ করেছেন। এটা কাম্য নয়। কারণ শিক্ষকদের কনটেন্ট সব সময় নির্ভুল হয় না।
ওই কর্মকর্তা বলেন, কোনো লেখা আপলোড করার পরে শিক্ষকরাই কমেন্ট করেন। তারাই রেটিং করেন এবং সপ্তাহে তিনটি লেখা সেরার তালিকায় আসে। আর কপি-পেস্ট করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিজের মতো করে তথ্য বিভ্রাট করা মোটেই কাম্য নয়।
তবে এমন ঘটনার পর পোর্টালটিতে নোটিশ করে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করা হবে বলে জানান এটুআইয়ের শিক্ষক বাতায়ন সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, এ নিয়ে বাতায়নে একটি সচেতনতা ও সতর্কতামূলক পোস্ট করা হবে। এছাড়া ফেসবুক গ্রুপেও (শিক্ষক বাতায়ন) এ নিয়ে সতর্ক করা লেখা দেওয়া হবে।
শিক্ষক বাতায়ন নিয়ে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এটি মূলত এটুআই পরিচালনার মূল দায়িত্বে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের দু’একজন কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন।
প্রকাশিত বইয়ে বঙ্গবন্ধু বিষয়ে তথ্য বিভ্রাট করার বিষয়টি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের কয়েকজন কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারাও বিস্ময় প্রকাশ করেন।
অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) ড. মো. আবদুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, আমি নতুন এসেছি। শিক্ষক বাতায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে মনিটরিংয়ের বিষয়ে কাজ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৭
এমআইএইচ/এএ