ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রশ্নফাঁসের তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়াই ভর্তি জবিতে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৭
প্রশ্নফাঁসের তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়াই ভর্তি জবিতে!

জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) 'এ' ইউনিটের অর্থাৎ বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই প্রশ্ন ফাঁসের তীব্র অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ আমলে নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু তদন্ত কমিটির কোনো ধরনের প্রতিবেদন ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ভর্তি করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর জবির 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শুরুর প্রায় দুই ঘণ্টা আগে ভর্তিচ্ছুদের হাতে হাতে প্রশ্নের নমুনা দেখা যায়।

হাতেনাতে কয়েকজনকে আটকও করা হয়।

পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, মূল প্রশ্ন এবং ফাঁস হওয়া প্রশ্ন হুবহু একই। এ ঘটনার তদন্ত করতে ১৫ অক্টোবর তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে তদন্ত কাজ শেষ না হওয়ায় ৪২ দিনেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি কমিটি। এরই মধ্যে তদন্তের সময় বৃদ্ধির জন্য দুইবার আবেদন করেছে তদন্ত কমিটি।

এদিকে অন্য সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ায় সরাসরি ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২১ নভেম্বর থেকে অন্যান্য ইউনিটে ভর্তি শুরু হলেও 'এ' ইউনিটের ভর্তি শুরু হয় ২৬ নভেম্বর রোববার থেকে। অন্যান্য ইউনিটে যেখানে ভর্তি শুরুর ৭ দিনে ৩০-৩৫ ভাগের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি সেখানে ‘এ' ইউনিটে ভর্তি শুরুর দুই দিনের মাথায় প্রায় ৮০ ভাগ ভর্তিচ্ছু তাদের ভর্তি পক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, জবি প্রশাসন পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নিতে আগ্রহী নয়। যে কোনোভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই তদন্ত কমিটিকে উপেক্ষা করেই ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। মূলত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ভর্তি প্রক্রিয়ায় তদন্ত প্রতিবেদনের কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।

প্রশ্নফাঁসকৃত পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করা জবি শাখা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মেহরাব আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসন নিজে স্বীকার করেছে যে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। তা স্বীকার করেই তারা শিক্ষকদের একদিনের বেতন কর্তন করেছে, তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। কিন্তু তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ছাড়াই তারা ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করে এই প্রশ্নফাঁসকে বৈধতা দিচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান জবির আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আককাস বাংলানিউজকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন এখনো প্রস্তুত হয়নি। সময় বৃদ্ধি করার আবেদন করেছি। আশা করি দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে পারব। তবে প্রতিবেদন ছাড়াই ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত।

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার বিকেলে জবি ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৭
ডিআর/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।