ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বিজয়ের রঙে সেজেছে ঢাবি ক্যাম্পাস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
বিজয়ের রঙে সেজেছে ঢাবি ক্যাম্পাস বিজয় দিবস উপলক্ষে সেজেছে ঢাবির হল-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ২৬ মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণা পূর্ণতা পায় ১৬ ডিসেম্বর।

দেখতে দেখতে বিজয়ের ৪৬ বছর পূর্ণ করে ৪৭ এ পা রাখবে বাংলাদেশ। প্রতি বছর ঢাবি কর্তৃপক্ষ বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালন করে দিবসটি।

তারই ধারাবাহিকতায় এবছরও বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় বিজয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। কার্জন হল, কলা ভবন, স্মৃতি চিরন্তন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবনসহ সব একাডেমিক, প্রশাসনিক ভবন ও হলগুলোতে বিজয়ের রঙে রাঙাতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লাল, সবুজ, নীল রঙের বাতির আলোয় ক্যাম্পাসে এসেছে বিজয়ের আমেজ। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান স্মৃতি চিরন্তন, স্বাধীনতা সংগ্রামসহ স্থাপনাগুলোতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সাজসজ্জা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসিতে শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত জাতীয় পতাকা।

বিজয় দিবস উপলক্ষে সেজেছে ঢাবি-ছবি-বাংলানিউজবিজয় দিবস উদযাপন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম আনোয়ার বলেন, রঙে রঙে ছেয়ে গেছে ক্যাম্পাস, শোনা যাচ্ছে বিজয়ের গান। সবাই ৭১'র রক্তাক্ত যুদ্ধের পর যেভাবে বিজয় লাভ করেছে বাংলাদেশ তা স্মরণ করছে দেখে ভালোই লাগছে। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি তাদের জন্য বর্ণাঢ্যভাবে বিজয় উদযাপন আমাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে।

বিজয় দিবসে দেশের জন্য নিজের কর্তব্যগুলো ভালোভাবে পালন করার কথা জানিয়ে রোকেয়া হলের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মাহবুবা আক্তার স্মৃতি বাংলানিউজকে বলেন, বিজয়কে শুধু একটি দিনে নয়, প্রতিটা দিন মনে লালন করতে হবে।  

বিজয় দিবস উপলক্ষে সেজেছে ঢাবি-ছবি-বাংলানিউজবিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাবির প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের পর বিজয় অর্জন আমাদের জন্য গর্বের, আনন্দের ও প্রত্যাশার। আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। বাংলাদেশের এখন যৌবনকাল চলছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার পথে অনেকদূর এগিয়েছি কিন্তু সম্পূর্ণতা আসেনি।

তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমে এর পূর্ণতা আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা তরুণরা ক্ষুধা, দারিদ্য, অশিক্ষা সব কিছু ছাড়িয়ে সোনার বাংলা গড়বে। তাদের দেশপ্রেম, আদর্শ, চারিত্রিক গুণাবলী দেশকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।  
 
বিজয় দিবসে ঢাবির কর্মসূচি

সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টা ৩০মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত এবং সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের উদ্দেশে যাত্রা ও ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাবি এবং ছায়ানটের উদ্যোগে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে সঙ্গীতানুষ্ঠান।

সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য দোয়া করা হবে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি বিজয়ের পথে, সংবাদপত্রের সঙ্গে দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী করবে। সকাল ১০টায় টিএসসি চত্ত্বরে এর উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
এসকেবি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।