ঢাকা, রবিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

অতিরিক্ত ফি দিয়েও পরীক্ষা দিতে পারেনি অর্ধশত শিক্ষার্থী

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৮
অতিরিক্ত ফি দিয়েও পরীক্ষা দিতে পারেনি অর্ধশত শিক্ষার্থী

পাথরঘাটা (বরগুনা): বরগুনার পাথরঘাটায় অতিরিক্ত টাকা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেও এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি অর্ধশত শিক্ষার্থী।

জানা যায়, উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের জালিয়াঘাটা এসইডিপি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১৮ সালে তাদের নিজস্ব ৬৪ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধিত হয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য বিভিন্ন বিদ্যালয়ে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া প্রায় ৫২ জন ছাত্র-ছাত্রীকে পরীক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা নেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দুলি আক্তার।

এরপর ওই শিক্ষক টালবাহানা শুরু করেন। পরে তিনি টাকাও ফেরত দেননি আর ওইসব শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র হাতে না পাওয়ায় পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারেনি।

পরীক্ষা দিতে ব্যর্থ কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মো. আকমল, ফাতিমা আক্তার ও রাবিয়া আক্তার বাংলানিউজকে জানায়, টেস্ট পরীক্ষায় ইংরেজি ও হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে অকৃতকার্য হয় তারা। এরপর কাকচিড়া ইউনিয়নের জালিয়াঘাটা এসইডিপি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক দুলি আক্তার প্রতিশ্রুতি দিলে তাকে ১৫ থেকে ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।  

একইভাবে, লেমুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টেস্ট পরীক্ষায় ইংরেজি (দুই বিষয়), গণিত ও ফিজিক্সে অকৃতকার্য বেতমোর গ্রামের শিক্ষার্থী মো. রাব্বি ১৩ হাজার টাকা দিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়। এরকম অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জালিয়াঘাটা এসইডিপি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস খান ও সহকারী শিক্ষক দুলি আক্তার মোটা অংকের টাকা নিয়েও প্রবেশপত্র দেননি বরং চেয়ারম্যান দ্বারা তাদের অপমান করিয়েছে।

এ ব্যাপারে জালিয়াঘাটা এসইডিপি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস খান বাংলানিউজকে বলেন, মহৎ উদ্দেশে ওই শিক্ষার্থীদের এবছর পরীক্ষা জন্য সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করি। এজন্য ৪০টি আবেদন ফরমে আমি স্বাক্ষর করি। কিন্তু আমি কোনো টাকা নেইনি, সহকারী শিক্ষক দুলি আক্তার টাকা নিয়েছেন। শিক্ষাবোর্ডে তিনিই যোগাযোগ করেছেন আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানিনা।  

অপরদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক দুলি আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, আমি কোনো টাকা নেয়নি। শিক্ষার্থীরা টাকা দিয়েছে প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস খানের কাছে। তিনিই টাকা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আলম বাংলানিউজকে বলেন, কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস খান ও অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক দুলি আক্তার চলমান এসএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৮
এনটি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।