ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

শোকে স্তব্ধ কুয়েট, না ফেরার দেশে চার শিক্ষার্থী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৮
শোকে স্তব্ধ কুয়েট, না ফেরার দেশে চার শিক্ষার্থী শোকে স্তব্ধ কুয়েট

খুলনা: একে একে চার মেধাবী শিক্ষার্থী চলে গেলেন না ফেরার দেশে। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কেউ হারিয়েছে সহপাঠী বন্ধুকে, কেউ হারিয়েছে বড় ভাইকে, মা-বাবা হারালো তার সন্তানকে, দেশ হারালো চার প্রকৌশলীকে।

শনিবার (২৪ মার্চ) দিনগত রাত ১টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকায় মাস্টারবাড়ি এলাকায় একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।  

কুয়েটের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষবর্ষের চার শিক্ষার্থী গত ১০ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত স্কয়ার গ্রুপের একটি টেক্সটাইল মিলে এক মাসের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্টের (ইন্টার্ন) জন্য ময়মনসিংহের ভালুকার মাস্টারবাড়ি এলাকার একটি ৬তলা ভবনের ৩তলায় অবস্থান করছিলেন।

 

দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় মো. তৌহিদুল ইসলাম। গুরুতর দগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২৮ মার্চ) রাতে মো. শাহীন মিয়া, পরদিন বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) রাতে মো. হাফিজুর রহমান এবং শুক্রবার (৩০ মার্চ) সকালে দিপ্ত সরকারের মৃত্যু হয়।

কুয়েটের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের  ১৩তম ব্যাচের সাবেক জিএস ইয়াসির আরাফাত শুক্রবার দুপুরের বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগের চার শিক্ষার্থীকে হারিয়ে আমরা বাকরুদ্ধ। এসব শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৫০ হাজার টাকা কুয়েট প্রশাসন দিয়েছে। বাকি টাকা কুয়েট শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে। ’

কুয়েট প্রশাসন আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় অবহেলা করেছে অভিযোগ করেন তিনি বলেন, নিহতের প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। কিন্তু কুয়েট প্রশাসন তা মেনে নিচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চার মেধাবী শিক্ষার্থীর অকাল প্রয়াণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। এক শোক বিবৃতিতে কুয়েট ভাইস-চ্যান্সেলর শিক্ষার্থীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ২৫ মার্চ আহতদের দেখতে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ছুটে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। ঢাকায় অবস্থানরত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী এতোদিন হাসপাতালে অবস্থান করে চিকিৎসার সবধরণের সহযোগিতা নিশ্চিত করেন। কিন্তু সব চেষ্টা বিফল করে সবাইকে চোখের জলে ভাসিয়ে চির বিদায় নিলো কুয়েটের মেধাবী চার শিক্ষার্থী।

এদিকে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ উদঘটান এবং ভবিষ্যতে আইনগত সুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি, বিসিএসআইআর’র বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমন্বয়ে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৮
এমআরএম/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।