ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

‘সুফিয়া কামাল হলের ঘটনা প্রাতিষ্ঠানিক নারী নির্যাতন’ 

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৮
‘সুফিয়া কামাল হলের ঘটনা প্রাতিষ্ঠানিক নারী নির্যাতন’  মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সুধীজনেরা/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের ঘটনা বাংলাদেশে প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতন বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট গবেষক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ।

রোববার (২২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা কর’ শিরোনামে এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘সচেতন শিক্ষকবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে আয়োজিত এ মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা অংশ নেন।



সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, কয়েকদিন ধরে কয়েকজন শিক্ষকের নাম অব্যাহতভাবে মনে আসছে। তারা হলেন, স্যার পি জে হাটর্গ, অধ্যাপক আহমেদ ফয়জুর রহমান, অধ্যাপক রমেশ চন্দ্র মজুমদার। এই অধ্যাপকরা কোনো শিক্ষার্থীর সামান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা হলেও ছাত্রদের কাছে ছুটে যেতেন। এমনও হয়েছে রাত ২-৩টা পর্যন্ত সঙ্গে থাকতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি উপাচার্য তিনি শিক্ষার্থীদের যেমন শিক্ষক, তেমন অভিভাবকও।

সুফিয়া কামলা হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, উপাচার্য বলেছেন অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক মনে হয়েছে। বাংলাদেশে এই প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোনো নারী নির্যাতিত হলো। সেটা হলো বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ভূখণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। সুতরাং, এটা আমাদের সবার জন্য লজ্জার। আমি শুধু এটা বলবো প্রাতিষ্ঠানিক নারী নির্যাতনের ঘটনা এটাই যেন সর্বশেষ হয়।  
 
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে আমরা শিক্ষকরা আছি। তোমাদের যে কোনো ন্যায্য দাবির সঙ্গে আমরা আছি, পাশে থাকবো। যদি ছাত্রদের হয়রানি করা হয়, তাহলে শিক্ষকরা সমুচিত জবাব দেবেন। ছাত্রদের আটক করার আগে আমাদের আটক করতে হবে।  

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ৬টি লিখিত দাবি পাঠ করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান। দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষার পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে হবে; তাদের মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; বিধিসম্মত সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ছাড়া অন্য কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না; রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিংবা বেসরকারি কোনো গোষ্ঠী দ্বারা কোনো ছাত্র-ছাত্রী যেন আক্রান্ত না হয় সে জন্য অবিলম্বে একটি বিশেষ সেল গঠন করতে হবে।

‘অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নয়, আন্দোলন চলাকালে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলোর সঙ্গে যারা সুনির্দিষ্টভাবে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে নারকীয় তাণ্ডব ঘটানোর জন্য যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনসহ সব আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ, আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বেপারী, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক সংগীতা আহমেদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তাসনীম সিদ্দিকীসহ অর্ধশত শিক্ষক।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৮
এসকেবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।