ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৮
কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল সংবাদ সম্মলনে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ছবি- শাকিল

ঢাকা: আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণা নিয়ে প্রজ্ঞাপনের দাবিতে দেশের প্রতিটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

শনিবার (১২ মে) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।

রোববার (১৩ মে) বেলা ১১টায় এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

হাসান আল মামুন বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী ভাইদের ওপর অতি উৎসাহী কিছু সন্ত্রাসী হামলা চালায়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই। এছাড়া রংপুরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেয় এবং আন্দোলনকারীদের ছবি তুলে গ্রেপ্তারের হুমকি দেওয়া হয়। অন্যদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরও ছবি তোলেন। এসব ঘটনার প্রতিবাদ ও সংসদে প্র্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে আমরা দেশের প্রতিটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল পালন করবো। বিক্ষোভ চলাকালে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

যুগ্ম-আহ্বায়ক নূরুল হক নূর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৩১ দিন পার হলেও এখনো প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি। সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার সময় তারা আমাদেরকে বারবার আশ্বাস দিয়েছিলেন, ৭ মে’র মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। কিন্তু আজ ১২ মে হলেও আমাদের কাঙ্ক্ষিত প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি। তাই বার বার তাগাদা দিয়ে আসছিলাম, আমরা বাংলার ছাত্র সমাজ আর আন্দোলন করতে চাই না। আমাদের সঙ্গে দেওয়া প্রতিশ্রুতি কেন রক্ষা করা হচ্ছে না? তাহলে কি ছাত্র সমাজের সঙ্গে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিলেন? টালবাহানা না করে অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। অন্যথায় রাজপথ না ছাড়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সরকারের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে না উল্লেখ করে নূর বলেন, কোটা থাকবে কি-না এর জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি বাংলার ছাত্র সমাজের সঙ্গে একটি প্রহসন। প্রধানমন্ত্রী জাতির সামনে স্পষ্ট ঘোষণার পর প্রজ্ঞাপনের জন্য কোন কমিটির দরকার নেই। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কমিটি করলে করতে পারে। আমরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছি না। আমরা সরকারের উন্নয়নের সহযোগী। এজন্য বার বার আমরা সময় দিয়েছি।

যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, আমাদের মধ্যে যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং অংশ নিয়েছেন তাদের উপর ও তাদের পরিবারের ওপর হামলা করা হচ্ছে। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক জসীম উদ্দীনের নিরীহ বাবা-মার ওপর চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীরা শুধুমাত্র এই আন্দোলনের কারণে হামলা করছে। আমরা কি দোষ করেছিলাম? আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছি। এ কারণে কি আমাদেরকে হয়রানি করা হবে? এসব সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এর আগে গত বুধবার (০৯ মে) দুপুরে একই দাবিতে টিএসসিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বৃহস্পতিবারের (১০ মে) মধ্যে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন না হলে আগামী রোববার (১৩ মে) থেকে প্রতিটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন হাসান আল মামুন।

তারও আগে মঙ্গলবার (০৮ মে) বেলা ১১টায় মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘ছাত্র সমাজের সঙ্গে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। আমরা বলে দিতে চাই ছাত্র সমাজ কোনও চক্রান্ত মেনে নিবে না। আপনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করে ছাত্র সমাজকে শান্ত করুন। তারা এখন ক্ষুব্ধ। নতুবা তারা আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও অহিংস। সামনে যে আন্দোলন চলবে সেটিও শান্তিপূর্ণ হবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর অহিংস আন্দোলনের চেতনায় বিশ্বাসী’।

বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, মহিলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ৫ শতাংশ, ক্ষেত্র বিশেষে জেলা কোটা ১০ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী কোটা ১ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৮
এসকেবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।