ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রাণশক্তি দিয়ে ‘দৃষ্টিহীনতা’কে জয় করলেন সিয়াম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
প্রাণশক্তি দিয়ে ‘দৃষ্টিহীনতা’কে জয় করলেন সিয়াম দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ভর্তির সুযোগ পেয়ে এবার স্বপ্নপূরণের পালা সিয়ামের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বিএম রেদোয়ান হাবিব সিয়াম। এসএসসি পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। দৃষ্টিহীন হওয়ায় তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রুপ দেওয়া যে কঠিন সেটি তিনি উপলব্ধি করেছেন গভীরভাবে। তবে প্রবল ইচ্ছা ও অফুরন্ত প্রাণশক্তি দিয়ে ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ জয় করেছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধীনে অনুষ্ঠিত ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৪১৫তম হয়েছেন।

সিয়ামের বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নে।

বাবা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস কৃষি গবেষণা অফিসে কর্মরত, মা রেহনো পারভীন গৃহিণী। জিপিএ-৫ নিয়ে কাশিপুর হাইস্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি এবং রহমতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন।

ঢাবির মেধা তালিকায় নাম থাকায় উচ্ছ্বসিত সিয়াম। স্বপ্ন পূরণের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। সেই হিসেবে স্বপ্ন দেখা। তবে আমার জন্য কাজটা অনেক কঠিন ছিল। কোন সাফল্য একজনের পক্ষে সম্ভব নয়। আব্বু-আম্মু, শিক্ষক ও বন্ধুদের সহযোগিতায় আমি সব প্রতিবন্ধকতা জয় করতে সক্ষম হয়েছি। প্রতিটি পদক্ষেপে সবাই পাশে ছিলেন। এজন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞতা।

কোন বিষয়ে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা, জানতে চাইলে কৃতী এই শিক্ষার্থী বলেন, আমার প্রথম পছন্দ লোক প্রশাসন তারপরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা ইতিহাস। এখনো বিষয় পছন্দ ফরম পূরণ করিনি।

ভবিষ্যতে কি হওয়ার স্বপ্ন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বড় হয়ে কি হবো এটার চেয়ে আদর্শ নাগরিক হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
 
বাবা হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি সত্যিই গর্বিত একজন বাবা। এর চেয়ে ভালো মুহূর্ত আর হতে পারে না।
 
সিয়ামকে উৎসাহ দিয়েছেন শিক্ষক জোবায়ের আহমেদ। তিনি বলেন, আমি জানি সিয়াম অনেক ভালো করবে। চোখে দেখতে না পেলেও গভীর অন্তর্দৃষ্টি আর অফুরন্ত প্রাণশক্তি সিয়ামকে নিয়ে যাবে অনেক দূর। তার বেসিক ভালো হওয়ায় ক্লাসের প্রথম থেকে উৎসাহ দিয়েছি। ক্লাসে কোন প্রশ্ন করলে কেউ না পারলে সে পারতো।
 
সিয়াম ভর্তি পরীক্ষায় বাংলায় পেয়েছেন ১৫ দশমিক ৬০, ইংরেজিতে ১২ দশমিক ৯০ ও সাধারণ জ্ঞানে ৩৪ দশমিক ৮০। সর্বমোট ৬৩ দশমিক ৩০। এসএসসি ও এইচএসসি নম্বর মিলিয়ে মেধা স্কোর ১৪৩ দশমিক ৩০।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৩৩ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন ৪ হাজার ৭৪৭ জন। পাসের হার ১৪ শতাংশ। খ ইউনিটের অধীনে আসন রয়েছে ২ হাজার ৩৭৮টি। পাসকৃত শিক্ষার্থীরা আগামী ২৬ সে‌প্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে পছন্দ তালিকা পূরণ করতে পারবেন। সাক্ষাৎকার শুরু হবে ২১ অক্টোবর থেকে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
এসকেবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।