ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ফেনী ইউনিভার্সিটি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৮
শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ফেনী ইউনিভার্সিটি  সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন ফেনী উইনিভার্সিটির উপাচার্য, প্রফেসর ড. সাইফুদ্দিন শাহ।

ফেনী: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানেই টাকার ছড়াছড়ি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ শিক্ষা নিতে হলে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। কিন্তু ব্যতিক্রম ফেনী ইউনিভার্সিটি। 

বুধবার (৩১ অক্টোবর) কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঐহিত্যবাহী গুণবতী কলেজের হল রুমে ফেনী ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে আয়োজিত উচ্চ শিক্ষা সম্পর্কিত এক সেমিনারে একথা বলেন ফেনী ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, বিশিষ্ট মৎস্য বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. সাইফুদ্দিন শাহ।

উপাচার্য বলেন, ফেনী ইউনিভার্সিটিতে যে সেমিস্টার ফি গ্রহন করা হয় তা অন্যান্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ফি-এর চেয়ে কম।

আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত অথচ মেধাবী, এমন শিক্ষার্থীরা যেন ঝরে না পড়ে, সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখি।

আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে পারে, সেভাবেই আমরা তাদের গড়ে তুলতে চাই। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করাই ফেনী ইউনিভার্সিটির মূল লক্ষ্য। তাই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পর্যায়ে স্কলারশিপ দিয়ে থাকি।  

মুক্তিযোদ্ধার কোটা জাতীয় পর্যায়ে খেলাধুলায় অবদান রাখা শিক্ষার্থীদেরও আমরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকি।

পড়ালেখার তুলনামূলক খরচ এবং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মান ও সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি এতদাঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের ফেনী ইউনিভার্সিটিকে তাদের পছন্দের তালিকায় রাখার আহ্বান জানান।  

নিজেদের অঞ্চলে উচ্চ শিক্ষার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকলে তা গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি বলেন, এখানে পড়ালেখা করলে অর্থের অপচয় কম হবে। পাশাপাশি শহর-গ্রামের বৈষম্য দূর হয়ে, তরান্বিত হবে দেশের সার্বিক উন্নয়ন।  

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের এমন অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে ঠিক মতো পড়ালেখা হয় না। এছাড়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ক্লাস ও পরীক্ষা ছাড়া সার্টিফিকেট বিক্রির অভিযোগও আছে। রাজধানী ঢাকার অলি-গলিতে অসংখ্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শোভা পাচ্ছে যার নিচে হোটেল রেস্তোঁরা শপিং সেন্টার। কিন্তু ফেনী ইউনিভার্সিটিতে সাত তলা বিশিষ্ট তিনটি বিল্ডিং রয়েছে। যার আয়তন ৫০ হাজার বর্গফুটের বেশি। তাই আমাদের এখানে শিক্ষার মান অন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকেও ভাল। তাই উচ্চ শিক্ষার জন্য কেন ফেনী ইউনিভাসিটি নয়? শিক্ষার্থীদের কাছে এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি।

উচ্চ শিক্ষায় আঞ্চলিকতা প্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রফেসর শাহ বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল যেমন- সীমান্ত, পাহাড়ী, উপকূলীয় দ্বীপ ও চরাঞ্চলে সহজে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে না। ফলে সে রকম এলাকা সমূহ আবশ্যিকভাবে উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে পড়ে। এরকমই একটি প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ও উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে ফেনীতে একটি ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত যুক্তিগ্রাহ্য হয়েছে।  

একটি ইউনিভার্সিটি হচ্ছে নতুন জ্ঞানের উৎপত্তি ও বিতরণের জায়গা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিস্তারের প্রাণকেন্দ্র। ইউনিভার্সিটি ছাড়া কোনো অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ফেনীতে এ ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠায় যেসব মহৎ ব্যক্তি এগিয়ে এসেছেন তিনি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

গুণবতী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসাইনের সভাপতিত্বে সেমিনারে ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার জনাব তায়বুল হক বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
 
ফেনী ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সঞ্চলনায় ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার এ এস এম আবুল খায়ের, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক মো. সাঈদ হোসেন পারভেজ, গুণবতী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৬০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।