ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ডাকসুতে সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা সাধারণ শিক্ষার্থীদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
ডাকসুতে সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা সাধারণ শিক্ষার্থীদের

ঢাকা: প্রায় তিন দশক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন হবে আগামী ১১ মার্চ (সোমবার)। তফসিল ঘোষণার পর এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে নির্বাচনের আলাপ। কী হবে বা হতে যাচ্ছে- এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচনে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। এই বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও প্রত্যাশা করছেন সুন্দর ও নির্বিঘ্ন নির্বাচনের।

সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে, তারপর আর নির্বাচন হয়নি। এবারের নির্বাচনে হলগুলোতে ভোটকেন্দ্র স্থাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ স্বাগত জানালেও ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগগুলো একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দাবি তোলে।

যদিও সে দাবি অগ্রাহ্যই থেকে যায়। তবে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ীই, ডাকসু নির্বাচন সফল করতে শর্তহীন সহযোগিতার আশ্বাস ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের ছাত্রসংগঠনগুলোর জোট ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলের রাজনীতি, ক্যাম্পাসে আধিপত্য, শিক্ষার পরিবেশ, দাবি-দাওয়া ও যৌক্তিক অধিকার নিয়ে আন্দোলন এবং অতীতের ইতিহাস নিংড়ে নানান হিসেব কষেই দেখছেন ডাকসু নির্বাচনকে।

মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে একসঙ্গে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আড্ডা দিচ্ছিলেন। তাদের সঙ্গে বাংলানিউজ কথা বলে ডাকসু নির্বাচনের ভাবনা নিয়ে। প্রায় সব শিক্ষার্থীই সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা করেন। বলেন শিক্ষার্থীবান্ধব প্রার্থীর পক্ষে তাদের অবস্থানের কথাও।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, ‘১৯৯০ এর পর ২০১৯ সালে এসে নির্বাচন হচ্ছে। তাই প্রত্যাশা অনেক। তবে সাধারণ ছাত্রদের কথা ভাববে এমন নেতৃত্বই চাই ডাকসুতে, যারা দল-মত নির্বিশেষে আধিকার আদায়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকবেন’।
 
ইংরেজি বিভাগের অমিত কুমার বিশ্বাস অবশ্য ভোটটাই ভালোয় ভালোয় হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশায় বুক বাঁধছেন। তিনি বলেন, ‘এর আগেও তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন হয়নি। তো নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আসলে কিছু বলতে পারছি না। তবে প্রত্যাশা করছি সুন্দর নির্বাচন হবে’।
 
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত আকতার ভাবছেন ভিন্নভাবে। তিনি বলছেন, ‘চলমান রাজনীতি একটি বড় ভূমিকা রাখবে ডাকসুতে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে সবাই ব্যক্তি ইমেজ ও রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করবে এবং সেভাবেই ভোট দেবে’।
 
একই রকম ভাবনা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আকবর হোসেনের। তিনি বলেন, ‘ভোট দিতে চাই, জানি না দিতে পারবো কি-না। একাডেমিক ভবনগুলোতে কেন্দ্র হলে ভালো হতো। নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বুঝতে পারবো। ’

ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি পদে নির্বাচন হবে। সংশ্লিষ্ট হলের ভোটার (আবাসিক ও অনাবাসিক) তার নিজ নিজ হলের ভোটকেন্দ্রে বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট দেবেন। পদাধিকারবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডাকসুর সভাপতি। নির্বাচন হবে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস), সহ-সাধারণ সম্পাদক, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, সংস্কৃতি সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক, সমাজ সেবা সম্পাদক এবং ১৩ সদস্য পদে।
 
নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমানকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং আরও পাঁচজনকে রিটার্নিং কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
 
এরপর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়ন বিতরণ হবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি।
 
যাচাই-বাছাইয়ের পর ৩ মার্চ হলের নোটিশ বোর্ড ও ওয়েবসাইটে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর ভোটগ্রহণ হবে ১১ মার্চ সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
 
হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল আবাসিক হলগুলোর নোটিশ বোর্ডেও টাঙিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চূড়ান্ত হওয়া ডাকসুর গঠনতন্ত্র ও আচরণবিধি অনুযায়ীই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নিজ নিজ আবাসিক হলেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে সেদিনই গণনার পর ফল ঘোষণা করা হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
ডিএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।