ছাত্রসংগঠনগুলোতে চলছে এখন নির্বাচনের প্রস্তুতি। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার সময় ঘনিয়ে আসায় প্রার্থিতার প্যানেল চূড়ান্ত করতে চলছে জোর চেষ্টা।
তবে ‘মিনি পার্লামেন্ট’ খ্যাত ডাকসু নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হয়েছে কোটা আন্দোলনকারীরা। সাম্প্রতিক সময়ে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রহণযাগ্যতাও রয়েছে তাদের। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ডাকসু নির্বাচনে জয়ী হতে তৎপরতা শুরু করেছে অধিকাংশ ছাত্রসংগঠন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে অধিকাংশ ছাত্রসংগঠনগুলো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আমরা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ডাকসুতে মোট ২৫টি পদ সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, সংস্কৃতি সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক এবং ১৩ সদস্য পদে এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোয়ন ফরম বিক্রি শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি। চলবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে যোগাযোগ করা হয় জোটবদ্ধ নির্বাচনের জন্য। যদিও আলোচনা থেকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের ঘটনায় ছাত্রলীগের একটি অংশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল লিখেন, ‘ভোটে জেতার জন্য শিবির নুরু-রাশেদের সঙ্গে আপস করা লাগে তাহলে সংগঠন হিসেবে আমাদের আর কি বাকি থাকলো? এতে আমাদের সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দেউলিয়াত্ব প্রমাণিত হয়। যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কারো সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে জিততে হয়, তাহলে এমন ডাকসু নির্বাচন আমি চাই না। আশা করি এমনটি হবে না। যদি এমনটি হয় তাহলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নামে আলাদা প্যানেল দেবে। ’
অন্যদিকে ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশনসহ প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরাও আন্দোলন ও প্যানেল নিয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জোটবদ্ধভাবে প্রগতিশীল জোটের ব্যানারে নির্বাচন করব। সেখানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।
কোটা আন্দোলনকারীদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নূর বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টির আন্দোলনে আমরা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। প্রার্থিতা প্যানেল নিয়ে অধিকাংশ সংগঠন আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ভোট কেন্দ্র বাইরে করাসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবি মানা হয়নি। আমরা দ্রুত দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাই। আর নির্বাচনে আমাদের প্যানেল থাকবে এটা চূড়ান্ত। জোট করা নিয়ে আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
এসকেবি/এসএইচ