ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ঐতিহ্য রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশে। মূলত শিক্ষার্থীদের স্বার্থ নিয়ে ছাত্র সংসদের যাত্রা হলেও স্থান, কাল, পাত্রভেদে সংসদগুলো একেক রকম ভূমিকা রাখে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারতের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়ে থাকে। এর মধ্যে বিখ্যাত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, জওহার লাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়। এখানকার ছাত্র সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর প্রভাব থাকে।
এছাড়াও শ্রীলংকার জাফনা বিশ্ববিদ্যালয়, পাকিস্তানের করাচি বিশ্ববিদ্যালয়সহ এসব দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ঐতিহ্য রয়েছে। এখানেও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে।
ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার রিমিট বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও ছাত্র সংসদ রয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলেরার কোনো ধরনের প্রভাব নেই। শুধুমাত্র ছাত্রদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করে। বিশ্বের সব ছাত্র সংগঠনের গঠন ও পদের সঙ্গে মোটামুটি মিল রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক ও সাময়িকী প্রকাশ, ক্রীড়া নিয়ে কাজ করে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন ভোটরে মাধ্যমে যদিও ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। অনির্বাচিত ভিসিকে পদাধিকার বলে ছাত্র সংসদের সভাপতি করা হয়েছে।
ইউরোপ আমেরিকায় ভোট হয় অনলাইনে। কোন ধরনের ব্যানার পোস্টার করে প্রচারণা হয় না। নির্বাচন করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা তাদের কার্যক্রম ও ইচ্ছা তুলে ধরেন ই-মেইলের মাধ্যমে। পরে শিক্ষার্থীদের পাশপাশি প্রশাসনের সঙ্গে প্রজেকশান মিটিং হয়। প্রার্থীরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের সামনে যৌক্তিক দাবিগুলো তুলে ধরেন। প্রশাসনও এসব বিষয়ে জ্ঞাত থাকে। পরে অনলাইনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন তারা। এখানে দুই ধরনের সংসদ রয়েছে। একটা সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংসদ ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংসদ।
নেদারল্যান্ডের টুয়িন্টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নকালীন সময়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল।
বিদেশর ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র ইউনিয়নগুলো গঠিত হয় শিক্ষার্থীদের জন্য। সেখানে প্রশাসনের সঙ্গে তারা আগে বসে কি কি বিষয় শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করবে ঠিক করে নেয়। কিন্তু আমাদের এখানে এ বিষয়টি পরিলক্ষিত হয় নি। আমি আশা করব আমাদের এখানেও এ বিষয় হবে।
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশে অনেক দাবি উপস্থাপন কর হয়। যেখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য মুখ্য হয়ে যায় সেখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ একেবারে গৌণ হয়ে পড়ে। বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতি আন্তরিকতা থাকে। কিন্তু আমাদের এখানে ঘাটতি রয়েছে। ’
বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কোন ধরনের দলীয় প্রচারণা নেই। প্রার্থীরা মেইল করেন। ছোট ছোট আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। সেখানে তাদের যোগ্যতা নির্ধারিত হয়। ’
বাংলাদেশ সময়: ০২৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৯
এসকেবি/জিপি