বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুর দেড়টায় রোকেয়া হলের অনশনরত ছাত্রীদের সমর্থনে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নুরুল হক বলেন, ‘একটি অভিযোগ এসেছিল, এক রুমে ব্যালটে গোপনভাবে সিল মারা হচ্ছে।
হল প্রভোস্ট সবাইকে দেখিয়ে ব্যালট পেপার খোলা হয়েছে এমন দাবির প্রেক্ষিতে নুর বলেন, তিনি আমাদের দেড় ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে দেখিয়েছেন সেখানে কিছু ব্যালট পেপার খোলা ছিল। দেরি করে যখন ঢুকার পারমিশন দেওয়া হয় তখনি ধারণা হয়েছিল সেখানকার পেছনে দরজা রয়েছে জানালা খোলা পেয়েছি। সন্দেহ হয়েছে সেখান দিয়ে যা সরানোর সেটা সরিয়ে ফেলেছেন। ব্যালট পেপার কেন আলাদা রুমে থাকবে তিনি প্রশ্ন রাখেন।
ডাকসু ভিপি বলেন, আমার বোনেরা যখন তাদেরকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে স্লোগান দিচ্ছিল তখন তাদেরকে হুমকি দিয়েছিল। উল্টো তাকে আমরা নাকি লাঞ্ছিত করেছি, এজন্য একটা মামলা হয়েছে। তিনি বলেছেন মামলা নিজে করেননি। আমরা মনে করি, মামলা যিনি করেছেন তিনি অবশ্যই তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমি মনে করি শিক্ষক হিসেবে তিনি নৈতিকতার পরিচয় দিতে পারেননি। তিনি এই পদে থাকার যোগ্য নয়। ছাত্রদের প্রতি দায়িত্বহীনতা প্রমাণিত হয়েছে। প্রশাসন ছাত্রীদের খোঁজ খবর নিতে পারতো। এ হলের সর্বোচ্চ অভিভাবক তিনি কেন দেখা করে কথা বলার সৎ সাহস দেখাতে পারছেন না।
প্রশাসনকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, ছাত্রদের দাবানল জ্বলে ওঠার আগেই যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন এবং এই হলের প্রাধ্যক্ষের অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। যারা আন্দোলন করতেছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এর আগেও কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ও হুমকি দেওয়া হয়েছিল। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে জবাব দিয়েছি। প্রশাসনকে বলতে চাই ছাত্রদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রদের উপর কোনো স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবেন না। তাহলে ছাত্ররা প্রতিহত করবে।
‘আমি মনে করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও যদি অনশন করে তার গুরুত্ব রয়েছে। রোকেয়া হলের ছাত্রীরা পুনর্নির্বাচনের যে দাবি করেছে তা অত্যন্ত যৌক্তিক। আমি তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি। ’
দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে নুর বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে আমাদের ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে বসবো। সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো। এতো কারচুপির পরও যারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তারা যদি চায় আমি দায়িত্ব গ্রহণ করবো না চাইলে করবো না।
এসময় অনশনকারীরা বলেন, আমাদের প্রভোস্ট কথা বলেননি। এখন আমাদের সঙ্গে ভিসি স্যারের দেখা করতে হবে এবং দাবিসমূহ মানতে হবে।
এর আগে সোমবার (১১ মার্চ) ভোট চলাকালে শিক্ষার্থীরা জানান, রোকেয়া হলে ৯টি ব্যালট বাক্স থাকার কথা বলা হলেও ভোটগ্রহণ শুরুর সময় ৬টি ব্যালট বাক্স দেখানো হয় প্রার্থীদের। কিন্তু বাক্সগুলো সিলগালা করা হয়নি। বাংলাদশে কুয়েত মৈত্রী হলে আগে থেকেই সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় এই হলের শিক্ষার্থীরাও বাক্স তল্লাশির দাবি জানান।
যে কক্ষে ব্যালট বাক্স রাখা হয়েছে সেখানে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগ মনোনীত সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, জিএস প্রার্থী গোলাম রাব্বানী, ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নুরুল হক। কক্ষটি দেখে ছাত্রলীগের নেতারা কোনো সমস্যা নেই বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু ছাত্রদলের অনিক জানান, বাক্স সিলগালা নেই। তখন নূর কথা বলতে গেলে তাকে মারধর করা হয়। এতে তিনি আহত হলে তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৯/আপডেট: ১৫৪০
এসকেবি/এএটি