বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) আন্দোলনের দশম দিনে বরিশাল-পটুয়াখালী-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
টানা এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধের কারণে মহাসড়কের তিন প্রান্তে বাস-ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহনের দীর্ঘ সাড়ি পড়ে যায়।
এরপর বরিশাল মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ চলছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী তারা সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচে অবস্থান নেন। একই সঙ্গে সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের রক্তে লেখা ব্যানার নিয়ে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এসময় ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে নিজেদের অর্থায়নে জেব্রা ক্রসিং তৈরি করেন তারা। পরে বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার কর্ণকাঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-পটুয়াখালী-ভোলা মহাসড়কে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শফিকুল ইসলাম জানান, কীর্তনখোলা নদীর শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও খয়রাবাদ সেতুর মাঝ বরাবর সড়কে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে নিজেদের রক্তে লেখা ব্যানার, ফেস্টুন ও মাথায় ফিতা বেঁধে শ্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হলে ও যাত্রীদের কথা ভেবে সড়ক অবরোধ তুলে দেয়া হয় বলে জানান তিনি।
তবে দাবি না মানা হলে পুনরায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
২৬ মার্চ ছাত্র-ছাত্রীদের বাদ দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএম ইমামুল হক। এরই প্রতিবাদে ওইদিন বিকেল থেকেই জোরদার আন্দোলন শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এরপর ২৮ মার্চ রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে হল ত্যাগের ঘোষণা বর্জন করে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন উপাচার্য। তবে উপাচার্যের বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকল হলের ডাইনিং বন্ধ করে দেয়। অন্যদিকে ১ এপ্রিল উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
পরে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।
এতেও উপাচার্য পদত্যগ না করায় ৩ এপ্রিল নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘন্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৯
এমএস/এসএ/এমএ