তবে আন্দোলনের ১৭তম দিনে উপাচার্যের এ ছুটির দরখাস্ত মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত হলেও এতে সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন।
ফলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বন্ধের দিনেও আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
>>>আরও পড়ুন...রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তাকে ববিতে অবাঞ্চিত ঘোষণা
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এরপর পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন বাংলানিউজকে জানান, রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ায় আমরা প্রথম থেকেই ভিসির পদত্যাগ চেয়ে আসছি। তারপর বরিশাল সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পূর্ণ মেয়াদে ছুটির (উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত) বিষয়টি উঠে আসে। এরপর আমরা ভিসির পদত্যাগ নয়তো পূর্ণ মেয়াদের ছুটির বিষয়ে লিখিত প্রাপ্তির দাবি জানিয়ে আসছি।
ছুটির দরখাস্ত ঠিকই দিয়েছেন তবে তা মাত্র ১৫ দিনের জন্য, তবে কি ১৫ দিন পরে তিনি আবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে চাচ্ছেন। পরীক্ষা বন্ধ দিয়ে টানা ১৭ দিনে মহাসড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে ববির শিক্ষার্থীরা, তাতেও যদি কারও টনক না নড়ে তবে শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন চালিয়ে যেতে অনড় রয়েছে।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর প্রেরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসিনুর রহমান সাক্ষরিত স্মারক সূত্রে জানা যায়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এসএম ইমামুল হক ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে ১১ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১৫ দিনে ছুটিতে যাচ্ছেন। আবার ওই স্মারকে ২৬ এপ্রিল উপাচার্যকে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে ওই দরখাস্তে বলা হয়েছে, উপাচার্যর ছুটিকালীন সময়ে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. একেএম মাহবুব হাসান তার নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত হিসেবে উপাচার্যর রুটিন কাজসমূহ পরিচালনা করবেন। এছাড়া বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সিন্ডিকেট সভা না থাকায় বিষয়টি পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
যে স্মারক বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছায়। এরপর বন্দর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেওয়ার জন্য বলা হলেও তারা তা করেননি। বরং কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা উপাচার্যর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হাসিনুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল রুমিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় বুধবারের মতো মহাসড় অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হলে টানা ৬ ঘণ্টা পরে বরিশাল থেকে সাগরকন্যা কুয়াকাটাসহ পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার সঙ্গে সড়কপথে যান চলাচল শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
এমএস/এনটি