ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবিতে চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি, সঙ্গী হবে ‘নদী’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
জবিতে চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি, সঙ্গী হবে ‘নদী’ জবিতে চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি। ছবি: বাংলানিউজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বাংলা বর্ষবরণ উপযাপনে গ্রামীণ সংস্কৃতি ও চিরচেনা বাঙালি রূপে সাজাতে প্রতিবছরের মতো এবারও জবিতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এতে মূল থিম রাখা হয়েছে ‘নদী’ ও মূল স্লোগান রাখা হয়েছে ‘নদী বাঁচলে বাঁচবে দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

জবির এবারের বৈশাখ আয়োজন মূলত ‘নদী’ ও এর নানা অনুষঙ্গ নিয়েই সাজানো হয়েছে। এতে থাকছে মাছ, নৌকা, বজরা, ডিঙি, পাখি ও প্রায় বিলুপ্তির পথে থাকা দেশি শুশুকের প্রতিকৃতিসহ নদীর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন অনুষঙ্গ।

এছাড়া চারু শিল্পীদের হাতে তৈরি হচ্ছে নানা রঙের ছোট ছোট মাছ। বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায় এবারই প্রথম কোনো ধরনের মুখোশের পরিবর্তে মাছ প্রদর্শিত হবে। এছাড়াও থাকছে বিদায়ী বছরগুলোর প্রধান থিম বা প্রতিপাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত শিল্পকর্ম। এছাড়া বাংলা বছরের প্রথম দিনটি বরণ করে নিতে শিল্পীর তৈরি বিভিন্ন শিল্প সামগ্রীর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে লাল সবুজের লাইটিং’র মাধ্যমে লাল ও সবুজের এক আবহ দেওয়ার চেষ্টাও থাকছে এ আয়োজনে।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের সামনে এবারের মূল থিম অর্থাৎ নদী ও এর অনুষঙ্গ তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা। এখানে মূলত বড় আকারের শুশুক, নৌকা, বজরা তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি বিগত বছরের থিমগুলোও ফুটিয়ে তোলার কাজ চলছে এখানে।

অপরদিকে ইউটিলিটি ভবনের তিনতলার চারুকলা বিভাগেও চলছে একই রকম কাজের ব্যতিব্যস্ততা। সেখানে তৈরি হচ্ছে ছোট আকারের বিভিন্ন ধরনের মাছ ও অন্যান্য শিল্পকর্ম।

চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরোজ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারো আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে এ কাজটি করছি। আসলে আমরা যারা চারুকলার শিক্ষার্থী রয়েছি তারা সারাবছর মুখিয়ে থাকি এ সময়টির জন্য। এটি এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা ও আনন্দের অবশ্যই। এবারের থিমটিও দারুণ। আশা করছি সবকিছু খুব ভালভাবে সম্পন্ন হবে।  

বিভিন্ন প্রতিকৃতি তৈরিতে শিক্ষার্থীদের দিক নির্দেশনারত এক চারু শিক্ষক জানালেন,  জবির এবারের বর্ষবরণে থাকছে নদীকে বাঁচানোর আকুতি, থাকছে নদীর দখল মুক্ত করার প্রত্যয়। এবার মুখোশের পরিবর্তে সবার হাতে দেখা যাবে মাছ, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। নদীর অনুষঙ্গ হিসেবে থাকবে বজরা, ডিঙ্গি, ময়ূরপঙ্খীসহ বিভিন্ন ধরনের নৌকা আর বাংলাদেশি শুশুক। তবে প্রস্তুতির সময় স্বল্প হওয়ায় মাছ ধরার গ্রামীণ উপাদানগুলো তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা গেছে, জবিতে আয়োজিত এবারের বৈশাখ আয়োজনে পুরান ঢাকার প্রায় সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সম্মিলিতভাবে অংশ নেবে। উৎসবের দিনে প্রথমে মঙ্গল শোভাযাত্রা সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সম্মুখ থেকে শুরু হয়ে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, ওয়াজঘাট, আহসান মঞ্জিল, পাটুয়াটুলি হয়ে জবিতে এসে শেষ হবে। এরপর শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

পহেলা বৈশাখ আয়োজনের সার্বিক দিক নিয়ে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। নদী যদি না বাঁচে তাহলে আমরাও বাঁচবো না। আমাদের টিকে থাকার স্বার্থে নদীকে রক্ষা করতে হবে। তাই বঙ্গবন্ধুর বাংলাকে বাঁচানোর জন্য বাঁচাতে হবে নদীকে। এবার পহেলা বৈশাখে আমাদের স্লোগান ‘নদী বাঁচলে বাঁচবে দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। ’

তিনি আরও বলেন, পুরান ঢাকায় একমাত্র জবিই এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক যে আবহ সেটি ধারণ করে চলছে। পুরান ঢাকার ৪০টির বেশি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান আমাদের সঙ্গে র‌্যালিতে অংশ নেবে। একইসঙ্গে আমরা এই এলাকার সবাইকে আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২১০৯
কেডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।