মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে পৃথকভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা। চলমান আন্দোলনের ২২তম দিন সকাল ১০টা থেকে ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি লোকমান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগ অথবা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এসময় তারা উপাচার্যের পদত্যাগ অথবা পূর্ণ মেয়াদে ছুটিতে যাওয়ার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্নোগান দিতে থাকেন।
অপরদিকে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে ববি শিক্ষক সমিতি। তৃতীয় দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে আট দফা দাবিতে এ অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন শিক্ষকরা।
এর আগে ২৬ মার্চ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আন্দোলন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন। এরই প্রতিবাদে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।
২৬ মার্চ থেকে তাদের লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া, ডিসি অফিস ঘেরাও, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ, নিজেদের শরীরের রক্ত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে লিখে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি, উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ ও মশাল মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
ববি উপাচার্যের ছুটির দরখাস্ত একপর্যায়ে আন্দোলনের দু’দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্ত শিক্ষার্থীরা হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
পরবর্তীতে গত শনিবার (৬ এপ্রিল) বরিশাল সার্কিট হাউজে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত লিখিত এক নোটিশে রোববার সকাল থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে শিক্ষার্থীরা সে নোটিশ প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ঘোষণানুযায়ী মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) অনির্দিষ্টকালের জন্য বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেন ববি শিক্ষার্থীরা। কিন্তু যাত্রী ভোগান্তি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ৫ ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন তারা। পাশাপাশি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
এমএস/ওএইচ/