সরকারি ছুটির কারণে দুদিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত থাকার পর মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ২৬তম দিনে সকাল ৯টায় উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
কর্মসূচিতে বিগত দিনগুলোর চেয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতিও বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
তবে ভিসিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আন্দোলনের শুরু থেকেই ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও তাদের দেখা যায়নি।
এদিকে ভিসির দেওয়া ডাকে সারা না দিয়ে কোনো শিক্ষার্থীই ক্লাসে যাননি। আবার শিক্ষকদেরও ক্লাস করানো নিয়ে কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। শিক্ষার্থীদের দাবি, যে ভিসিকে আমরা ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি, যার পদত্যাগ চাচ্ছি, তার ডাকে সারা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন ও শফিকুল ইসলাম, উপাচার্যের একটি লিখিত আবেদন প্রকাশ করেছেন। যেখানে ভিসি বলেছেন ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাংশ শিক্ষার্থীর আন্দোলন এটি, বাকিরা নাকি তার পক্ষে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। আন্দোলনতর শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি পাঁচ শতাংশের আন্দোলন হলে, বাকিরা সবাই তার পক্ষে থাকলে ভিসি কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না?
শিক্ষার্থীদের দাবি, ভিসি গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দিয়েছেন এর ঠিক ২৭ দিন পর লিখিতভাবে আবার শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলেছেন। ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এদিকে ভিসি ইমামুল হকের এমন বক্তব্যে হতাশ হয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়াসহ শিক্ষকরা। তারা জানান, গত ১৯ এপ্রিল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আয়োজনের মানববন্ধনে ৫০ জনের মতো শিক্ষকই ছিলেন। তাহলে সেখানে পাঁচ শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কীভাবে হিসাব কষে প্রকাশ করলেন ভিসি।
উল্লেখ্য, রোববার (২১ এপ্রিল) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার (উপাচার্যের) আবেদন নামে লিখিত বক্তব্য প্রকাশ করা হয়।
যেখানে উপাচার্য বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থসিদ্ধির জন্য চিহ্নিত গোষ্ঠী আমার পদত্যাগের দাবিতে বিগত প্রায় এক মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে তালা লাগিয়ে অবৈধভাবে কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এ অহেতুক আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী মিলিয়ে সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পাঁচ শতাংশের বেশি হবে না। এরা কার স্বার্থ হাসিল করার জন্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি ৯৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ধ্বংস করার জন্য নেমেছে।
লিখিত বার্তায় তিনি শিক্ষার্থীদের মঙ্গলবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্লাসে যাওয়ার জন্য বলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/