মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে দিনব্যাপী আন্দোলন করে তারা।
আন্দোলনের একপর্যায়ে দুই শিক্ষার্থী গায়ে কেরোসিন তেল ঢালে দেয় এবং বর্ধিত ফি বাতিল না করা হলে আত্মহত্যার হুমকি দেয় তারা।
জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে তারা ক্যাম্পাসে মিছিল ও মানববন্ধন করেন। পরে সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটক অবরোধ করে অবস্থান করে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে ‘বাবার রক্ত যদি সেই চুষতে হবে, প্রাইভেট না হয়ে পাবলিক কেন তবে??’, ‘ছাত্রের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন নয়’, ‘হৈ হৈ রৈ রৈ এত টাকা গেল কই’, ‘এক দফা এক দাবি বেতন ফি কমাতে হবে’ লেখা সংবলিত ফেস্টুন দেখা যায়।
তবে এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টা করেন।
তবে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায় না হলে এক পাও নড়বেনা বলে শিক্ষকদের জানিয়ে দেয়। এসময় উপস্থিত শিক্ষকরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ জনের একটি প্রতিনিধি দল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। তবে শিক্ষকদের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনের একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে দুই ছাত্র গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার হুমকি দেয়।
পরে দুপুর ১টার দিকে প্রশাসন ভবন থেকে সরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও কয়েক জন শিক্ষার্থী প্রধান ফটক সংলগ্ন ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরালের পাদদেশে আমরণ অনশন করেছে।
বিকাল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১২টার মধ্যে এ বিষয়ে মিটিংয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আন্দোলনকারীদের জানানো হয়। এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. আনিছুজ্জামানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।
পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সব ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করার ঘোষণা দেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি ফিসহ অন্যান্য ফি চারগুণ বৃদ্ধি করে সাড়ে তিন হাজার থেকে ১৪ হাজার করা হয়। এখন প্রতি বছর সাড়ে নয় হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। যা আগে ছিল তিন হাজার। এতো টাকা বহন করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। বুধবার বেলা ১২টার পর্যন্ত প্রশাসন এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের দাবি মেনে না হলে আবারও আমরা পথে নামতে বাধ্য হবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-উর রশিদ আসকারী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি একটু ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। সবার সঙ্গে কথা বলে বুধবার বেলা ১২টার মধ্যে একটি মিটিং ডাকা হবে। মিটিংয়ে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
জিপি