শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌথ উদ্যোগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের মূল ফটকের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন শুরু হয়। যা চলবে ভিসি অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি লোকমান হোসেন জানান, এতোদিন শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগ নয়তো পূর্ণ মেয়াদে ছুটিতে যাওয়ার লিখিত আবেদনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে। যেখানে শিক্ষক-কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে আন্দোলন শুরু হয়। আজ ১ মাস পূর্ণ হলো অর্থাৎ ৩০তম দিনে গিয়ে ঠেকেছে আমাদের আন্দোলন। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি মানার বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং গত ২১ এপ্রিল ভিসি লিখিত আবেদনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের এককথায় ‘সন্ত্রাসী’ বলেছে। আমাদের প্রশ্ন অহিংস আন্দোলন করে সন্ত্রাসী হলাম কিভাবে।
তিনি বলেন, আন্দোলন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল থেকে ভিসির পদত্যাগ নয়, অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। যেখানে একাত্মতা প্রকাশ করে শিক্ষকরাও আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
এদিকে টানা ৩০ দিন ধরে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন কর্মসূচি চলার কারণে সেশন জটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে ববিতে। তবে শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক বলেই এর সঙ্গে শিক্ষকদের একাত্মতা প্রকাশ। আর দীর্ঘ সময়ের আন্দোলনে যে ক্ষতি হয়েছে তা অধিক সময় ও পরিশ্রম দিলে অল্পদিনে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, উপাচার্যের (ভিসি) একটি লিখিত আবেদন প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে তিনি বলেছেন ৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর আন্দোলন এটি, বাকিরা নাকি তার পক্ষে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। আর ৫ শতাংশের আন্দোলন হলে, বাকিরা সবাই তার পক্ষে থাকলে তিনি কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না।
এদিকে বিগত সময়ের মতোই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সকাল থেকেই কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। তবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আন্দোলনের শুরু থেকেই ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি। সেই ধারাবাহিকতায় আজও তাদের দেখা যায়নি।
পাশাপাশি ২১ এপ্রিল ভিসির দেওয়া ডাকে সাড়া দিয়ে আজও কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে যাওয়ার তৎপরতা দেখায়নি। আবার ক্লাস করানো নিয়ে শিক্ষকদেরও কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘যে ভিসিকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে, যার পদত্যাগ চাওয়া হচ্ছে, তার ডাকে সাড়া দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না’।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৯
এমএস/এসএইচ