সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিশ্চিত হন। সঙ্গে সঙ্গে তারা আন্দোলনস্থল অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় উল্লাসে মেতে ওঠেন।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় (অধিশাখা-১৮) এর উপ-সচিব হাবিবুর রহমান সাক্ষরিত একটি অফিস আদেশে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এসএম ইমামুল হকের ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে ১১ এপ্রিল থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ৪৬ দিনের জন্য নিম্নবর্ণিত শর্তে ছুটি মঞ্জুর করেছেন।
শর্ত অনুযায়ী উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. একেএম মাহবুব হাসান নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন।
রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হয় বলে অফিস আদেশের শেষে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি আদেশের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিবসহ ১১ জনকে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, উপাচার্য দুই দফায় ছুটির আবেদন করেছিলেন। তা মঞ্জুর হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এখন আশা করি শিক্ষার্থীরা দ্রুত ক্লাসে ফিরে যাবে এবং পড়াশোনায় নিজেদের মনোনিবেশ করবে। এ লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতা লোকমান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আন্দোলনের ৩৫তম দিন সোমবার সকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিসির অপসারণ, নয়তো তাকে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে ছুটিতে পাঠানোর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন। দুপুর ২টার দিকে ভিসিকে ৪৬ দিনের ছুটিতে পাঠানোর খবর পাওয়ার পরই গোটা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা উল্লাসে মেতে ওঠেন। আপাতত আন্দোলন স্থগিত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ভিসির অপসারণ, নয়তো পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে ছুটিতে পাঠানোর দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করেছেন, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে অতি দ্রুত ক্লাসে ফিরে যাবেন।
গত ২৬ মার্চ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় প্রতিবাদ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন। এরই প্রতিবাদে ২৬ মার্চ থেকেই ভিসির পদত্যাগ অথবা পূর্ণাঙ্গ মেয়াদের ছুটির দাবিতে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।
উপাচার্য অধ্যাপক এসএম ইমামুল হকের দায়িত্বের মেয়াদ ২৭ মে পর্যন্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৯
এমএস/টিএ