বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমেও চলছে অচলাবস্থা। আটকে আছে বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা, ফলাফল।
এদিকে ভিসি না থাকায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার মধ্যেই গাছাড়া ভাব লক্ষ্য করা গেছে। স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু থেকেই কোনো প্রো-ভিসি নেই। আর ভিসির পদটি শূন্য হওয়ার পর সেখানে দায়িত্ব পালনে কাউকে অনুমতিও দেয়নি সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি অনুষদের মধ্যে একটি ছাড়া বাকিগুলোর ডিনের দায়িত্ব পালন করেন উপাচার্য। ফলে ওইসব বিভাগের পরীক্ষা, ফলাফল প্রকাশসহ সব কার্যক্রম স্থবির রয়েছে।
অপরদিকে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা জানান, ভিসি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং আর্থিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। ভিসির অবর্তমানে বেতন তুলতে পারছেন না শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। আবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ল্যাবের ব্যবহারিক উপকরণ না কিনতে পারায় এবং উন্নয়নখাতের বরাদ্দ খরচ করতে না পারায় ফেরত যাচ্ছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের অর্থ। এমনকি জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট দেওয়ার কথা থাকলেও ভিসি না থাকায় সেই বাজেটও দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক আবু জাফর মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, উপাচার্য শূন্যতায় বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সেশন জট কমানোর একটা সুযোগ ছিলো, কিন্তু উপাচার্য না থাকায় এখন আর সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের ফলাফলও আটকে আছে।
এদিকে, নতুন উপাচার্য হিসেবে ৩-৪ জনের নাম নিয়ে ক্যাম্পাসে বেশ আলোচনা হচ্ছে। যাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. একিউএম মাহাবুব এবং ডুয়েট এর গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু নাঈম শেখের নাম শোনা যাচ্ছে।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোয় প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের ‘কটাক্ষ’করার অভিযোগ উঠে সদ্য সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হকের বিরুদ্ধে। উপাচার্যের ওই মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে ২৬ মার্চ বিকেল থেকেই আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে টানা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। যার সঙ্গে একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন।
২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ৪৬ দিনের (১১ এপ্রিল-২৬ মে) ছুটি অনুমোদন দেন। ছুটি শেষে ২৭ মে ঢাকার লিয়াজো অফিসে শেষ কর্মদিবসের দায়িত্ব পালন করেন ভিসি।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৯
এমএস/জেডএস