ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে গবেষণার নাম থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ বাদ!

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৬ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০১৯
সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে গবেষণার নাম থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ বাদ!

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে একটি এমফিল গবেষণাপত্রের শিরোনামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম থাকায় এ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন বিভাগের বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা। এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তারা গবেষণাটির শিরোনাম থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি বাদ দিতে বাধ্য পর্যন্ত করেছেন। ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দ বাদ দিয়েই গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে একাডেমিক কমিটিতে।

বঙ্গবন্ধুর সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের খাদিজা আক্তার নামে এক গবেষকের গবেষণা নিয়ে একাডেমিক কমিটিতে এমন কাণ্ডে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ২১ জন শিক্ষক কর্মরত।

এদের মধ্যে ১৪ জন শিক্ষকই বিএনপিপন্থি বলে পরিচিত। আর মাত্র ৭ জন শিক্ষক পরিচিত আওয়ামী লীগপন্থি। যেহেতু বিএনপিপন্থি শিক্ষক বেশি এবং তারা একাডেমিক কমিটিতে আপত্তি তুলেছেন, সেজন্য গবেষণাপত্রের শিরোনাম থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দ বাদ দিয়েই তা জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন হয়েছে।

জানা যায়, খাদিজা আক্তার ‘বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি: প্রেক্ষিত মধ্যপ্রাচ্য’ শিরোনামে ওই এমফিল গবেষণা করেন। সেই গবেষণায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামল ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক যেসব পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হয়েছিল, সেসব বিষয় নিয়ে তথ্য সন্নিবেশ করা হয়। এই গবেষণাটির সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন বিভাগের অধ্যাপক আরিফুর রহমান এবং কো-সুপারভাইজার ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান।

গবেষণা শেষে তা জমা দেওয়া হলে শিরোনাম নিয়ে আপত্তি ওঠে একাডেমিক কমিটিতে। বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা গবেষণাপত্রের শিরোনামে ‘বঙ্গবন্ধু’ উল্লেখ করা আপত্তি প্রকাশ করেন। সে কারণে গত ৪ জুলাই অনুষ্ঠিত বিভাগের একাডেমিক কমিটির সাধারণ সভায় গবেষণাপত্রটির শিরোনাম পরিবর্তন করতে প্রস্তাব দেন তারা। তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী গবেষেণার শিরোনাম করা হয় ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি (১৯৭২-৭৫); প্রেক্ষিত মধ্যপ্রাচ্য’। এরপর বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এই প্রস্তাবই গৃহীত হয়।

এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গবেষণার সুপারভাইজার অধ্যাপক আরিফুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম উল্লেখ করে বাংলাদেশে এর আগে অনেক গবেষণা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেহেতু প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং জাতির পিতা, তাই তার শামনামলে মধ্যপ্রাচ্যকে ঘিরে যে পররাষ্ট্রনীতি গৃহীত হয়েছিল, সেই বিষয়টি নিয়ে আমরা গবেষণাটি করেছি। সে অনুযায়ী আমরা গবেষণার শিরোনামও দিয়েছি। কিন্তু একাডেমিক কমিটিতে গবেষণার শিরোনামে ‘বঙ্গবন্ধু’ বাদ দিতে বলা হয়েছে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. ফজলুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘একাডেমিক কমিটিতে উপস্থিত শিক্ষকদের অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে গবেষণার শিরোনাম পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। এখানে কেউ এককভাবে কিছু করেনি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।