সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক (১১ জন) শিক্ষার্থী ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত দু’দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে আমরণ অনশন করছেন।
১ম দফা (জকসু নির্বাচন): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ গঠনের বিষয়ে কোনো ধারা, উপধারা বা গঠনতন্ত্র নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে একটি গঠনতন্ত্র তৈরি করার জন্য অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাসকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) কার্যদিবেসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনের জন্য সুপারিশ ও ‘জকসু’ গঠণতন্ত্র প্রণয়নে অনুরোধ করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ‘জকসু’ গঠণতন্ত্র প্রণয়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন প্রথম সমাবর্তন শেষে নির্বাচনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২য় দফা (বাসের ডাবল শিফট চালু): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিবহনের জন্য বর্তমানে ৩৫টি বাস ও মাইক্রোবাস চলমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবহনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লি: থেকে আরও ১০টি বাস এবং ১টি দ্বিতল বাস কিনতে ইতোমধ্যেই অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী আগস্ট, ২০১৯-এর মধ্যে বাসগুলি সরবরাহ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলে বাসগুলির অন্তরর্ভুক্তিতে পরিবহন সমস্যার সমাধান হবে।
৩য় দফা (ছাত্রী হল নির্মাণ): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’ নামে ১৬-তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে হলে ছাত্রীদের বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। হলটি নির্মাণের সম্পূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি)। ওই নির্মাণ কাজের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। হলটি আগামী ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯ এর মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
৪র্থ দফা (শিক্ষক নিয়োগ): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য থেকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আগামীতে এই নিয়োগের হার বাড়ানো হবে।
৫ম দফা (নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জে ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণের জন্য ৯শ কোটি টাকা ইতোমধ্যে ছাড় করা হয়েছে। নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান। নতুন ক্যাম্পাসের মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে। বর্তমানে সে অনুযায়ী প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে।
৬ষ্ঠ দফা (ক্যান্টিনের খাবারের মান): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের খাবারের মান ইতোমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে। হ্রাসকৃত মূল্যে পরাটা, ডিম, ভাজি, খিচুড়ি, ভাত, সবজি, মাছ, মাংস, ভর্তা, সিংগাড়া ও চা পাওয়া যাচ্ছে। ক্যান্টিনে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জন্য নতুন চেয়ার-টেবিল অর্ডার দেওয়া হয়েছে। লাইট, ফ্যান, পানির ফিল্টার সরবরাহ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এখন থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন অর্থাৎ, শুক্র ও শনিবার ক্যান্টিন খোলা থাকবে।
৭ম দফা (গবেষণায় বরাদ্দ): বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু থেকে গবেষণাখাতে বাজেট উত্তরোত্তর বাড়ছে। ২০১৩ সালে এ খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫ (পাঁচ) লাখ টাকা। বর্তমানে (২০১৯ সনে) এ খাতে বাজেট বরাদ্দ রয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সুতরাং, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর গবেষণা বিষয়ে কোনো আর্থিক সংকট নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। তাই উপাচার্য শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করে নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৯
কেডি/এএ