বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন বলেন, আমরা বর্তমান উপাচার্যকে ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছি। এর মধ্যে পদত্যাগ না করলে ঘোষিত সময়ের পরে আমরা তাকে যেখানে পাবো, সেখানেই প্রতিরোধ করবো। আমরা তাকে আর মাননীয় সম্বোধন করতে চাই না। মাননীয়ের মর্যাদা তিনি রাখেননি। দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের শুধু পদত্যাগ নয়, এর সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
উপাচার্যের উদ্দেশে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু বলেন, আপনার জন্য অপশন দু’টো- নিজে পদত্যাগ করুন অথবা জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আপনাকে টেনে-হিঁচড়ে পদ থেকে নামাতে বাধ্য হবে। আপনার সৎ-সাহস থাকলে অবাঞ্ছিত অবস্থায় কেন্দ্র পরিদর্শনে যেতেন না। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ওপর দায়বদ্ধতা থেকে আমরা কোনো কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছি না। তবে, এটাকে আমাদের দুর্বলতা ভাবার কারণ নেই। আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আমাদের কঠোর রূপ দেখবেন।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, দুর্নীতিবাজ ভিসি জনগণের ট্যাক্সের টাকা থেকে দুই কোটি টাকা ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে কেউ এমনটা দেখেনি যে, সরকার দলীয় ছাত্রনেতাদের মধ্যে জনগণের টাকা দিয়ে দেয়। আমরা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে স্বাভাবিক আন্দোলন করছি। আল্টিমেটামের সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে সারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ফারজানা ইসলামকে চিরতরে বয়কট করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্বরত রোভার সদস্যদের ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ তুলে ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের সহযোগিতায় ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এর কারণে রোভার সদস্য লাঞ্ছনার পাঁচ দিন অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের অন্যতম মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, আমরা উপাচার্যকে সাত দিনের মধ্যে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছি। এর মধ্যে পদত্যাগ না করলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তার পতন ঘটানো হবে।
এসময় তিনি ধারাবাহিক আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মধ্যে রয়েছে- আগামী রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদী গানের আয়োজন ও ‘অবাঞ্ছিত’ উপাচার্যকে কালো পতাকা প্রদর্শন।
বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আরও অংশ নেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ, অধ্যাপক জাকির হোসেন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল জব্বার হাওলাদার, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, অধ্যাপক তারেক রেজা, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নূরুল ইসলামসহ জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার নেতাকর্মীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯
একে