সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে খুবির আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিব্লেট।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে অস্ট্রেলিয়া সরকার সহায়তা করে আসছে। এ সহায়তা বাড়াতে সরকারি পর্যায়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।
তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলাবারেটিভ প্রোগ্রামের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এবং ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের প্রশংসা করে হাইকমিশনার জুলিয়া নিব্লেট আরও বলেন, এখানে থ্রিএমটি প্রতিযোগিতা বিশ্বমানের হয়েছে এবং এ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভবিষ্যতে ভালো গবেষক তৈরি হবে। শিক্ষার্থীরা এ প্রতিযোগিতায় থিসিসের যে সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেছে তা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের বাইরেও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, তা থেকে ভালো ফলাফল বেরিয়ে আসতে পারে যা মানবকল্যাণে উপকারে আসবে। তিনি কলাগাছের অব্যবহৃত অংশ দিয়ে কাগজসহ কয়েকটি উদ্ভাবনা এবং এ ধরনের নতুন নতুন ধারণা উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ শিক্ষা-গবেষণার জোরদারে উদ্যোগের কথা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. রায়হান আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন থ্রিএমটি প্রতিযোগিতার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দিন খান।
চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করেন আয়োজন কমিটির সদস্য-সচিব বিজিই ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ড. আহসান হাবীব।
এর আগে, অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার চূড়ান্ত পর্বে প্রতিযোগিদের উপস্থাপনা উপভোগ করেন।
এ প্রতিযোগিতার চূড়ান্তপর্বে ১২ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করেন। এদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ান হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিংয়ারিং ডিসিপ্লিনের রাহাগীর সালেকিন। যৌথভাবে রানার আপ হয়েছেন বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিংয়ারিং ডিসিপ্লিনের ফাবলিয়া রোদশী এবং ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের আইনুন নিশাত ফরাবী। পিপলস চয়েসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের অসিত কুমার দত্ত।
পুরস্কার বিবরণী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক এবং জীববিজ্ঞান স্কুলের অধীন বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহিত করতে ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটিতে থ্রিএমটি প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বাংলাদেশে ২০১৭ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখান থেকে নিয়মিতভাবে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাকে স্বাগত জানান। পরে উপাচার্যের কার্যালয়ে হাইকমিশনার কিছুক্ষণ সময় কাটান।
এ সময় তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অবহিত হন। উপাচার্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম এবং বিশেষ দিক সম্পর্কে অবহিত করেন। পরে উপাচার্য অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মনোগ্রাম খচিত একটি ক্রেস্ট উপহার দেন। এ সময় অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সফরসঙ্গীরা উপস্থিত ছিলেন। চূড়ান্তপর্বে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের থিসিসের মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধক ভাইরাস ব্যবহার, মুরগি ও গো খাদ্যে প্রবায়োটিক ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষতিকর হরমন ও এন্টিবায়োটিক ব্যবহার রোধ, তেলাপিয়ার মাছের পর্দা ব্যবহার করে দগ্ধ রোগীর ক্ষতের উপশম, চিংড়ি মাছের খোলস ব্যবহার করে ন্যানোফাইবার তৈরিসহ নতুন নতুন গবেষণার বিষয়ে এ পর্বে তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
এমআরএম/আরআইএস/