ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

শিক্ষা

‘দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৯
‘দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে’ টর্চার সেলে তদন্তকারী দল

রাজশাহী: রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়ার ঘটনাটি চরম অবক্ষয়ের প্রকাশ। তাই এই ঘটনার দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। 

এমনটাই জানিয়েছেন, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের যুগ্ন সচিব ও পরিচালক (বিআইডব্লিউ) এস এম ফেরদৌস আলম।

অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর।

রোববার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ কমিটির তিন সদস্য রাজশাহী পৌঁছে তদন্ত শুরু করেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সিসিটিভির ফুটেজ দেখেন। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির প্রধান এই মন্তব্য করেন।

কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের যুগ্ন সচিব ও পরিচালক (বিআইডব্লিউ) এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করবে না। এটা কমিটমেন্ট। স্বার্থেই হোক আর যেকোনো শর্তেই হোক শিক্ষাঙ্গনে আমরা সুষ্ঠু পাঠদানের মতো পরিবেশ রাখবো। শিক্ষকদের মান-সম্মান যে বিষয়টি সরকার তা অত্যন্ত উচ্চ অবস্থান দিয়ে রাখেন এবং চিন্তা ভাবনা করেন। আর ঠিক সেভাবেই রেসপন্স করেন। সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন ঘটনার পর আপনারা সেই বিষয়টি দেখেছেন। আমরা কোনোভাবেই পিছিয়ে নেই। আমরা সামগ্রিকভাবে বিষয়টা দেখে প্রতিবেদন দাখিল করবো। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যারা রয়েছেন তারা অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেবেন।

এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাজশাহী পলিটেকনিক বা শুধুমাত্র রাজশাহী পলিটেকনিকই কেন দেশের প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই যেন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে সে ব্যাপারে আমাদের বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে, আমাদের মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত আছে সেইসব দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাখা ছাত্রলীগের টর্চার সেল নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌস আলম বলেন, তারা তদন্ত শুরু করেছেন। অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এখনই তদন্তের সব কথা বলে দিলে তো তা আর তদন্ত থাকে না। তাই সব বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তের পর প্রতিবেদন তৈরি করবেন। এরপরই তা প্রকাশ করা হবে বলেও জানান সরকারি তদন্ত কমিটির এই প্রধান। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারী দলের সদস্যরাতদন্ত কমিটির আহ্বায়ক এসএম ফেরদৌস আলম বলেন, সকালে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বিকেলে তারা দুইজন ঢাকা থেকে প্লেনে রাজশাহী যান। কমিটির অপর সদস্য রাজশাহীতে ছিলেন। রাজশাহী পৌঁছেই তারা তদন্ত শুরু করেছেন। তারা তদন্ত শেষে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলেও জানান।

অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরের ফেলে দেওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর। রোববার এ কমিটি গঠন করা হয়। সন্ধ্যায় কমিটির তিন সদস্য রাজশাহী পৌঁছে তদন্ত শুরু করেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সিসিটিভির ফুটেজ দেখেন।

এ সময় তদন্ত দল ক্যাম্পাসে একটি টর্চার সেলের সন্ধান পায়। পুকুরের পশ্চিম পাশের ভবনের ১১১৯ নম্বর কক্ষে এ টর্চার সেল থেকে লোহার রড, পাত ও পাইপ পাওয়া যায়। পরে সেগুলো পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়। এ সময় তদন্ত কমিটির কাছে কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্র জানায়, ওই টর্চার সেলটি ছাত্রলীগের। ওই কক্ষের সামনে ছাত্রলীগের টেন্ট। ছাত্রলীগের নেতাদের কথা না শুনলে সেখানে নিয়ে গিয়ে টর্চার করা হতো।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের যুগ্ম সচিব ও পরিচালাক (পিআইডব্লিউ) এসএম ফেরদৌস আলমকে। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কারিকুলাম) ড. মো. নুরুল ইসলাম কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওমর ফারুককে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।