বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটের ২০৬০৫০ রোলধারী সাজ্জাতুল ইসলাম ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় ১২তম হয়েছেন।
পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে ১২তম স্থান পাওয়া ২০৬০৫০ রোলধারী সাজ্জাতুল ইসলামের কেন্দ্র ছিল কোটবাড়ির টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলার ৫ নম্বর কক্ষ। কিন্তু ওই কক্ষে পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির স্বাক্ষর তালিকায় তার স্বাক্ষর ছিল না। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময় এ রোল নম্বরের উত্তরপত্র পাওয়া যায় এবং ওএমআর মেশিনের মাধ্যমে এ উত্তরপত্র মূল্যায়িত হয় এবং ফলাফল তৈরি হয়। ফলাফল তৈরি হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ইউনিটের প্রবেশপত্র যাচাই-বাছাই কমিটি মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের কপি যাচাই বাছাই করে। এসময় সাজ্জাতুল ইসলামের প্রবেশপত্র পাওয়া যায়নি। তিনি মৌখিক সাক্ষাৎকারেও অংশগ্রহণ করতে আসেননি।
পরবর্তীতে এ ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হলে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতির স্বাক্ষর তালিকা এবং উত্তরপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় ওই কেন্দ্রের একই ভবনের তৃতীয় তলার ১১ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দেওয়া ২০৬১৫০ রোলধারী মো. আলী মোস্তাকিন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও এবং উপস্থিতির তালিকায় তার স্বাক্ষর থাকলেও তার রোলের উত্তরপত্র নেই। পরে দেখা যায় ২০৬১৫০ রোলধারী ভর্তিচ্ছু মো. আলী মোস্তাকিন উত্তরপত্রে রোল নম্বর লেখার নির্ধারিত স্থানে সঠিক রোল লিখলেও বৃত্ত ভরাটের স্থানে ‘১’ এর স্থলে ‘০’ ভরাট করেন। ওই কক্ষের দায়িত্বে থাকা পরিদর্শকের অসর্তকতায় বিষয়টি ধরা না পড়ায় উত্তরপত্রটি ভুলভাবেই মূল্যায়িত হয়। যার ফলে ২০৬১৫০ রোলধারী ভর্তিচ্ছু মো. আলী মোস্তাকিন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও তিনি রোল নম্বর ভুল লেখায় পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও ২০৬০৫০ রোলধারী সাজ্জাতুল ইসলাম মেধা তালিকায় স্থান পায়।
এ বিষয়ে ২০৬০৫০ রোলধারী সাজ্জাতুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ভাই জানান, সাজ্জাতুল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি।
এদিকে ইউনিটের ভর্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম খুবই গোপনীয় হলেও ভর্তি কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট কোনো সদস্য এ তথ্যটি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন বলে এমন ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল এ বিষয়ে বলেন, এটি কোনো জালিয়াতি নয় বরং একজন পরীক্ষার্থীর ভুলে এমনটি হয়েছে। আর বিষয়টি সম্পর্কে উপাচার্য মহোদয়কে আমরা আগেই অবগত করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত চলমান রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৯
আরএ