মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও প্রগতিশীল শিক্ষকদের একটি প্যানেলে সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন। এ প্যানেলে সম্পাদক পদে রয়েছেন বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক স্বপন।
আওয়ামীপন্থি ও প্রগতিশীল শিক্ষকদের অন্য প্যানেলে সভাপতি ও সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন এবং ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান। মোট ১৫টি পদের বিপরীতে এ প্যানেলে নির্বাচন করছেন ১৪ জন শিক্ষক।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সিমিত নির্বাচন-২০২০ এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন একই আদর্শের এ দুই প্যালেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম একাধিকবার সভা করেও একত্রিত করতে পারেনি তাদের। ৮ ডিসেম্বর (রোববার) সাধারণ সভা করে শাপলা ফোরাম। সেখানে সমিতির নির্বাচনী প্যানেলের ব্যপারে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় সভা মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
এরপর একাধিকবার সভা করে কার্যনির্বাহী কমিটি। সর্বশেষ আওয়ামী প্রগতিশীলদের প্যালেন সমোঝতা করতে গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত সভা করে। তবে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি।
শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, আমরা উভয় গ্রুপকে এক করতে ব্যর্থ হয়েছি। যথেষ্ট চেষ্টাও করেছি। শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে একটু ছাড় দেওয়ার মানসিকতা পোষণ করলে এক হওয়া সম্ভব হতো।
এদিকে আওয়ামী শিক্ষকদের বিভক্তি হওয়ার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একঘোয়েমি, পক্ষপাতিত্ব, কিছু শিক্ষককে অতিরিক্ত সুযোগ প্রদান, প্রশাসনিক ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখাসহ এক পক্ষকে দূরে সরিয়ে রাখার কারণে শিক্ষকদের মঙ্গে এই বিভক্তি হয়েছে।
শাপলা ফোরমের একাধিক শিক্ষক জানায়, প্রথমে শাপলা ফোরামের কার্যনির্বাহী সভায় শাপলার নির্বাচনী শিক্ষকরাই স্ব-স্ব পদে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তে নোট অফ ডিসেন্ট দেয় শাপলা ফোরমের ৫ জন সদস্য। পরে সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পেরে তা মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে উভয় গ্রুপ থেকে সাত জন করে এবং একজন নিরপেক্ষ থাকার প্রস্তাবনা ওঠে। প্রার্থীর সংখ্যা সমঝোতা হলেও অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান নির্বাচন করতে পারবেন না বলে দাবি জানায় এক পক্ষ। তবে অন্য গ্রুপ ১৫টি পদের মধ্যে মোট ১০টি পদ দেওয়ার শর্তে এ শর্তে রাজি হয়। এটি মেনে নেয়নি আরফিন-স্বপন প্যানেল।
এদিকে জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকরা নির্বাচনে যৌথভাবে প্যানেল একটি প্যানেল দিয়েছে। ওই প্যানেলে বিএনপি পক্ষে আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেনকে সভাপতি করে ৮ সদস্য এবং জামায়াতপন্থিদের পক্ষে আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানকে সম্পাদক করে ৭ জন শিক্ষক নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত করেছেন তারা।
তবে এ প্যানেলের বাইরেও স্বতন্ত্রভাবে সভাপতি ও সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ.এস.এম শরফরাজ নওয়াজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ বিষয়ে বিএনপি-জামায়াত প্যানেলেন সভাপতি প্রার্থী এবং জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, দলের একজন সিনিয়র সদস্য হওয়া শর্তেও দল থেকে বের হয়ে এমনটি কেন করেছেন তা আমার জানা নেই। তবে তিনি যেটি করেছেন সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
এসএইচ