ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

পাঁচ শতাধিক গবেষকের মিলনমেলা গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
পাঁচ শতাধিক গবেষকের মিলনমেলা গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে

ঢাকা: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় এতোটাই পরিবর্তন আসছে, যা মানুষ আগে কল্পনাও করেনি। তাছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা পেতেও শিল্প বিপ্লবের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলতঃ সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যেই ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন আগামী ২৪-২৫ ডিসেম্বর পূর্বাচল আমেরিকান সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে।  

সম্মেলনে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চীন ও জাপানসহ বিশ্বের ১২টি দেশের পাঁচ শতাধিক গবেষক ও প্রফেসররা অংশ নেবেন।

আয়োজকরা জানান, আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে মূলত তিনটি পৃথক ট্র্যাক প্রাধান্য পাবে। এর মধ্যে রয়েছে- ইন্টেলিজেন্ট কম্পিউটিং, নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সিকিউরিটি সিস্টেমস, ইলেকট্রনিক্স, পাওয়ার অ্যান্ড কমিউনিকেশন সিস্টেমস ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং।  

সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য ইতোমধ্যেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০৭টি গবেষণা প্রবন্ধ জমা পড়েছে। যার মধ্য থেকে বাছাইকৃত ৭৯টি প্রবন্ধ মৌখিক ও ৩৬টি প্রবন্ধ পোস্টার প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হবে। সম্মেলন পরবর্তী সময়ে গবেষণা প্রবন্ধগুলো ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) এক্সপ্লোর ডিজিটাল লাইব্রেরিতে স্থান পাবে।

সম্মেলনের জেনারেল চেয়ার ও গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, সম্মেলনে মূলত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিল্প ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির কৌশল সংক্রান্ত নানা বিষয় আলোচিত হবে।  

তিনি বলেন, শিল্প বিপ্লবের ফসল হিসেবে ইতোমধ্যেই আমাদের সবক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন এসেছে, তবে এ পরিবর্তন কেবলই সূচনা। কেননা চীন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনাম যেখানে কলকারখানায় রোবট পর্যন্ত স্থাপন করেছে, আমরা সেখানে ওই অর্থে চিন্তাও করতে পারছি না। স্বভাবতই বাংলাদেশের আরএমজি খাত এখন হুমকির মধ্যে। তাছাড়া আগামী ১০ বছরে ডিজিটাল বিপ্লবের ফলে আমরা এমন সব পরিবর্তনের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি, যা এর আগে ৫০ বছরেও সম্ভব হয়নি। তাই আপাতদৃষ্টিতে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা পেতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাই বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য। এসব বিষয় নিয়েই নানামুখি আলোচনা হবে এ সম্মেলনে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

সম্মেলনের প্রধান বক্তারা হলেন- যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট ফ্লোরিডার আইইইই ফেলো ও ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ এইচ রশিদ, আইইইই ফেলো ও যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রফেসর সজল কে দাস, উহান টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ও ডিরেক্টর ডেং ঝংমিন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সি টেসিড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আলমগীর হোসাইন, পরিচালক ফাহিম কাওসার, দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়ং হি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ভিশন বিভাগের প্রফেসর ওকসাম চে, জার্মানির ডার্মস্টাডট ইউনিভার্সিটির ফলিত বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর রহমতুল্লাহ খোন্দকার, জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইই’র সিনিয়র সদস্য মো. আতিকুর রহমান আহাদ, আইইইই বিডিএস চেয়ার ও বুয়েট প্রফেসর ড. সেলিয়া শাহনাজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের প্রফেসর লতিফুর খান।

আয়োজকরা জানান, সম্মেলনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অাসা গবেষকরা কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, রোবটিক্স অ্যান্ড সাইবার-ফিজিক্যাল সিস্টেমের ক্ষেত্রে উদ্ভাবিত গবেষণার ফলাফল ও শিল্প প্রদর্শন করবেন। যা শুধু চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়াই নয় বরং স্নাতকদের দক্ষতার মান বাড়াতে শিক্ষা ও শিল্পের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সম্মেলনে উপস্থাপিত মোট পাঁচটি প্রবন্ধকে সেরা হিসেবে নির্বাচিত করা হবে এবং তা পরবর্তীতে গ্রিন ইউনিভার্সিটির জার্নালে প্রকাশ পাবে।  

এছাড়াও সম্মেলনে সেরা প্রবন্ধের জন্য তিনজনকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড হিসেবে ‘ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ঢাকা,’ ‘ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা’ ও ‘ঢাকা-ব্যাংকক-ঢাকা’র টিকিট দেওয়া হবে।  

অন্যদিকে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড হিসেবে দেওয়া হবে যথাক্রমে ১০ হাজার, ৬ হাজার ও ৪ হাজার টাকা।  

আইইইই বাংলাদেশ সেকশনের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে আরও একটি বিশেষ পুরস্কার।  

দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে টেকনিক্যাল কো-স্পন্সর হিসেবে রয়েছে আইইইই, বাংলাদেশ সেকশন। গ্রিন ইউনিভার্সিটি ছাড়াও এতে বাংলাদেশ সরকারের ‘আইসিটি ডিভিশন’ ও ‘ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস’ আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা টেকসই প্রযুক্তিতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অবদান সম্পর্কে পূর্ণ স্বচ্ছ একটি ধারণা পাবে এবং দেশকে এ বিপ্লবের সুবিধা নিতে দিক-নির্দেশনামূলক আলোচনায় অংশ নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা আয়োজক প্রতিষ্ঠান গ্রিন ইউনিভার্সিটি সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
পিআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।