ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

স্বাধীনতাবিরোধীরা যুবসমাজের হাতে মাদক তুলে দিচ্ছে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২০
স্বাধীনতাবিরোধীরা যুবসমাজের হাতে মাদক তুলে দিচ্ছে

গোপালগঞ্জ: যখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে তখন স্বাধীনতাবিরোধীরা নানাভাবে আমাদের মেধাগুলোকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, বাংলার যুবসমাজ ধ্বংস করার জন্য তারা জানা-অজানা মাদক ধরিয়ে দিয়ে ধ্বংস করছে। তাই অভিভাবকদের খবর রাখতে হবে তাদের সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে।

কারণ আজকের শিশুরাই আগামীতে দেশের কর্ণধার হবে। তাই তাদের সুরক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।  

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নিলফা বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি দেশের সব বিদ্যালয়ে 'স্কুল ফিডিং' কর্মসূচি শুরু করা যায় তাহলে দুপুরে যেসব শিক্ষার্থী চলে যায় তারা স্কুলে থাকবে, ঝরে পড়ার হার আরো কমবে। ইতোমধ্যে সরকার পিডিবি-৪ এর মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে শ্রেণীকক্ষ করার চিন্তা করছে।  

‘ইউনিসেফসহ বিভিন্ন সংস্থা বলছে বাংলাদেশের ৬৫ ভাগ ছেলে-মেয়ে লিখতে পারে না, পড়তে পারে না। কিন্তু এক বছরের সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড গ্রহণের পর ৮৫ ভাগ ছেলে-মেয়ে লিখতে পারে, পড়তে পারে। ২০৪১ সালে সরকার উন্নত বাংলাদেশ করতে চায়, সেই উন্নত বাংলাদেশে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাই হবে কারিগর’।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ১৩ থেকে ১১তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার কাজ চলছে। শিক্ষকদের আমরা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছি। শিক্ষকদেরও আরো যত্নবান হয়ে শিশুদের পড়াশোনা করাতে হবে। যাতে তারা মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে। কারণ ২০৪১ সালে এ এক লাখ ৪০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেশ চালাবে। তাই তাদের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার কাজ শিক্ষকদের নিতে হবে।

জাকির হোসেন বলেন, বিএনপির আমলে ঝরে পড়ার হার পঞ্চাশ শতাংশের বেশি ছিল। আমরা শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি চালু করেছি। উপবৃত্তি টাকা সরাসরি মায়ের মোবাইলে পাঠিয়ে দিচ্ছি। স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বিস্কুট দেওয়া হচ্ছে। তাই আমাদের সরকারের সময় ঝড়ে পড়ার  হার কমে ১৮ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আর মিড ডে মিল চালু করার মাধ্যমে আমরা ঝরে পড়ার হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য কাজ করছি।  

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় স্কুলমিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম-আল-হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতি. দায়িত্ব) সোহেল আহমেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) রতন চন্দ্র পন্ডিত, প্রকল্প পরিচালক রুহুল আমিন খান, বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রতিনিধি মাহফুজ আলম, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাকিব হোসেন তরফদার, পৌর মেয়র শেখ আহম্মেদ হোসেন মির্জা, কুশলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালিদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।  

অনুষ্ঠানে শিক্ষক, অভিভাবক, সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
পরে প্রতিমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নিলফা বয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমলমতি শিশুদের মুখে রান্না করা খাবার তুলে দিয়ে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।  

তিনি জানান, পর্যায়ক্রমে সারা দেশে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় রান্না করা খাবার (মিট ডে মিল) চালু করা হবে। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস থেকে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় ১৬টি উপজেলার ৪’শটি বিদ্যালয়ে ৮৫ হাজার ৭০৫ জন শিক্ষার্থীকে পাইলট প্রকল্প ভিত্তিতে একদিন অন্তর একদিন রান্না করা খাবার পরিবেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে ওই ১৬টি উপজেলার সব স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা হবে। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৭৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৩টি বিদ্যালয়ে মিট ডে মিল চালু করা হলো।

এরআগে প্রতিমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং ফাতেহাপাঠ, বিশেষ মোনাজাত করে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করেন।

এরপর প্রতিমন্ত্রী মুজিববর্ষ উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়া জিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্ণারের উদ্বোধন করে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২০
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।