ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

‘বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পর বিজয়ের উল্লাস করেছে বাঙালি’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২০
‘বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পর বিজয়ের উল্লাস করেছে বাঙালি’

জামালপুর: স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফেরার পর বাঙালি জাতি বিজয়ের উল্লাস করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সামসুদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেছেন, নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধের পর একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। কিন্তু বাঙালি জাতি তার মহান নেতার জন্য অপেক্ষা করছিল।

তিনি দেশে ফিরে এলে মানুষ যতটা আনন্দ করে, ১৬ ডিসেম্বরেও তা করেনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এ কথা বলেন। সকাল ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির হল রুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক ড. সামসুদ্দিন বলেন, বাঙালি জাতির প্রতিটি আন্দোলনে ছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালিকে আন্দোলন সংগ্রামে পথ দেখিয়েছেন, স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে দমিয়ে রাখার জন্য, বাঙালিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বারবার তাকে জেলে দিয়েছে।

’৪৭-এর পর থেকেই পাকিস্তানের শাসকরা বুঝতে পেরেছিল বঙ্গবন্ধু থাকলে পূর্ব পাকিস্তানে শোষণ-নিপীড়ন চালানো যাবে না। তাই বঙ্গবন্ধুর ওপর জেল-জুলুম করতো তারা। নানা কৌশলে বঙ্গবন্ধুকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের জানা ছিল না। বঙ্গবন্ধুকে দমিয়ে রাখা যাবে না। তিনি মানুষের নেতা। জেলখানায় পুরে তাকে দমানো যাবে না। তার প্রমাণ তিনি দিয়ে গেছেন। ’

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়। সেখান থেকে লন্ডন হয়ে ১০ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরেন। মাঝে দিল্লিতে যাত্রাবিরতি করেন। সব ধরনের প্রটোকল ভেঙে বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানান ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী।

‘বাংলাদেশের প্রতি ইন্দিরা গান্ধীর যে ভালোবাসা ও এদেশের মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ আমাদের ঋণী করে। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। দিল্লিতে পৌঁছেই বঙ্গবন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সৈন্য প্রত্যাহারের কথা বলেন। এরপর কদিন পরই ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ’

অধ্যাপক ড. সামসুদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন অনেক বড় মনের মানুষ। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা তাকে রাখতে পারিনি। তিনি চিন্তাই করতে পারেননি তার ছেলেরা তাকে এভাবে হত্যা করতে পারে। বাংলার মানুষের প্রতি ছিল তার অগাধ বিশ্বাস।

‘বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাকে গড়ার কাজে হাত দেন। নানা পরিকল্পনা হাতে নেন। অল্প সময়েই দেশটাকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু বাস্তবায়ন করতে দেয়নি ঘাতকের ‍বুলেট। আজ তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ’

‘বাবার কাছ থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন তিনি। তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য কমেছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব। সবখাতেই উন্নয়ন হচ্ছে। এক্ষেত্রে সবার উচিত তার হাতকে শক্তিশালী করা। ’

বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বশেফমুবিপ্রবি উপাচার্য বলেন,  শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে জানতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে হবে। আর সে আলোকে নিজেদের ভবিষ্যত বাংলাদেশের দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ এইচ এম মাহবুবুর রহমান। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বশেফমুবিপ্রবির গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার ভট্টাচার্য, সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মাহমুদুল আলম, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহম্মদ শাহজালাল, ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল বারী।

এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহিয়ষী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ। এরপর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২০
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।